নিয়ন্ত্রণে না এলে করোনায় যুক্তরাষ্ট্র-যুক্তরাজ্যে ২৭ লাখের মৃত্যু হতে পারে

সরকার ও জনগণ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে এবং করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারি আকার নিয়ন্ত্রণ না করা গেলে যুক্তরাষ্ট্রে ২২ লাখ আর যুক্তরাজ্যে অন্তত পাঁচ লাখ মানুষের মৃত্যু হতে পারে। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের বিজ্ঞানীরা গবেষণার পর এমন তথ্যই জানিয়েছেন। লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের কোভিড-১৯ রেসপন্স টিমের প্রধান নিল ফার্গুসন এক বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিবেদনে এ কথা বলেছেন। ওই প্রতিবেদন প্রকাশের পর যুক্তরাজ্যের সরকারের সতর্কতামূলক তৎপরতা বেড়ে গেছে।
গত সোমবার যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের সান্ধ্যকালীন ব্রিফিংয়ে লন্ডনের ইম্পেরিয়াল কলেজের ওই প্রতিবেদনের কথা গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করা হয়। এ ছাড়া ওয়াশিংটনের হোয়াইট হাউসের করোনাভাইরাস রেসপন্স টাস্কফোর্সের প্রধান ডেবোরাহ বার্ক্সও করোনাভাইরাস মোকাবিলায় ওই প্রতিবেদনকে গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন। সংবাদমাধ্যম ওয়াশিংটন পোস্ট এ খবর জানিয়েছে।
ফার্গুসন ও তাঁর সহকর্মীরা জানিয়েছেন, দুই দেশের সরকার কোনো পদক্ষেপ না নিলে এবং ব্যক্তিপর্যায়ে জরুরি সতর্কতামূলক ব্যবস্থা না নেওয়া হলে, অর্থাৎ এই বৈশ্বিক মহামারি নিয়ন্ত্রণে না এলে লাখো মানুষের মৃত্যুর আশঙ্কা রয়েছে।
করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় উন্নত বিশ্বের দুটি দেশেই যদি এমন অবস্থা হয়, তাহলে অনুন্নত দেশগুলোতে ভাইরাসটির প্রভাবে কী অবস্থা দাঁড়াবে, তা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করছেন আন্তর্জাতিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।
যুক্তরাজ্যে এ পর্যন্ত করোনাভাইরাসে এক হাজার ৯৫০ জন আক্রান্ত হয়েছেন এবং তাঁদের মধ্যে ৭১ জনের মৃত্যু ঘটেছে। যুক্তরাষ্ট্রে করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন ছয় হাজার ৩২৯ জন আর এর মধ্যে ১০৭ জন মারা গেছেন। দেশটির অনেক বড় কোম্পানি তাদের কর্মীদের বাড়িতে বসে কাজ করার নির্দেশনা দিয়েছে। পরিস্থিতির বর্ণনা দিতে গিয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানান, করোনা পরিস্থিতি বিবেচনায় যুক্তরাষ্ট্রে জুলাই পর্যন্ত জরুরি অবস্থা জারি থাকতে পারে।
বিশ্বের ১৬৫টি দেশে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় দুই লাখে। এক লাখ ৯৯ হাজার ৫৮৪ জন আক্রান্তের মধ্যে ৮১ হাজার ২৭১ জন সুস্থ হয়েছেন। আর মারা গেছেন সাত হাজার ৯৭১ জন, বাকিরা চিকিৎসাধীন। তবে চীনে আক্রান্তের সংখ্যা কমে এসেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় দেশটিতে ১৩ জন আক্রান্ত হয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের পর অস্ট্রেলিয়ার একদল গবেষকও ভাইরাসটির প্রতিষেধক তৈরির ব্যাপারে আশাবাদী বলে জানিয়েছেন।