পশ্চিমবঙ্গে আগস্টের শেষে শুরু হতে পারে করোনার তৃতীয় ঢেউ

ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যে করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে আগস্ট মাসের শেষ দিকে—এমন আশঙ্কার কথা শোনালেন বিশেষজ্ঞরা। আর এই তৃতীয় ঢেউয়ে শুধু শিশুরা বেশি আক্রান্ত হতে পারে তাই নয়, বেশি আক্রান্ত হতে পারেন প্রাপ্তবয়স্করাও।
পশ্চিমবঙ্গের স্বাস্থ্য দপ্তরের বৈঠকে এমন কথাই শোনালেন বিশেষজ্ঞ কমিটির চিকিৎসকেরা। এখন থেকেই কড়াভাবে করোনাবিধি না মানলে এবং গণপরিবহণ পুরোমাত্রায় চালু হয়ে গেলে আগস্টের শেষ থেকেই করোনার তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়তে পারে পশ্চিমবঙ্গে।
পশ্চিমবঙ্গ স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রে জানা যায়, চলতি বছরের এপ্রিল মাসের শেষ সময়ে ও মে মাসে রাজ্যে করোনা আক্রান্তের নমুনার জিনোম সিকোয়েন্সে দেখা গেছে, ৯৪টি নমুনার মধ্যে ৮৭টি মহারাষ্ট্রের স্ট্রেইন। তবে এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গে করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলায় দশ জন চিকিৎসকের বিশেষজ্ঞ কমিটি করেছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর। বিশেষ করে শিশুদের চিকিৎসার জন্যও হয়েছে কমিটি।
আপাতত ভারতের মহারাষ্ট্রে তৃতীয় ঢেউ কবে আসছে, সে দিকে নজর রাখা হচ্ছে। কারণ, তার কয়েক সপ্তাহ পরেই বাংলায় তৃতীয় ঢেউ শুরু হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা।
এদিকে এরই মধ্যে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক ও মধ্যপ্রদেশে ‘ডেল্টা প্লাস’ স্ট্রেইনের দেখা মিলছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গে এখনও তার হদিস মেলেনি। তবে রাজ্যে নতুন কোনো স্ট্রেইন ঢুকেছে কি না, সে বিষয়ে নজরদারি চালানো হচ্ছে। নদীয়ার কল্যাণীতে ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব বায়োমেডিক্যাল জিনোমিক্সে’ যেসব নমুনার জিনোম সিকোয়েন্স করতে পাঠানো হচ্ছে, তার রিপোর্ট আরও দ্রুত পাওয়ার প্রস্তাব দিয়েছেন কমিটির সদস্যরা। বর্তমানে এই রিপোর্ট আসতে ১৫ দিন সময় লাগছে।
বিশেষজ্ঞ মহলের ধারণা, করোনার প্রথম ও দ্বিতীয় ঢেউয়ে পশ্চিমবঙ্গে শিশুদের আক্রান্তের হার ছিল ৩ শতাংশ। তৃতীয় ঢেউয়ে যা বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। করোনার তৃতীয় ঢেউ মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশেষ ওষুধের তালিকা করা হয়েছে। কোভিড যোদ্ধা বা স্বেচ্ছাসেবকের ব্যাবস্থাও নেওয়া হচ্ছে। বিশেষ করে করোনার তৃতীয় ঢেউ ঠেকাতে পশ্চিমবঙ্গের গ্রাম অঞ্চলগুলোকে বাড়তি নজর দিচ্ছে রাজ্য স্বাস্থ্য দপ্তর।
তৃতীয় ঢেউয়ের পূর্বাভাস বুঝতে মহামারি বিশেষজ্ঞদের নিয়ে কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের প্রতিটি জেলায় কোভিড রোগীর জন্য ডায়ালিসিস ইউনিট তৈরি রাখা, শহরে কোনো হাসপাতালে ভর্তি করোনা রোগীর এমআরআইয়ের প্রয়োজন হলে তাঁকে কলকাতা মেডিকেল কলেজ এবং এম আর বাঙুর হাসপাতালে নিয়ে পরীক্ষা করানোর প্রস্তাবও দেওয়া হয়েছে বলে স্বাস্থ্য দপ্তর সূত্রের খবরে জানা গেছে।