বৈঠকে বসছেন মোদি-মমতা, উঠে আসতে পারে সীমান্তে বিএসএফ প্রসঙ্গ

ভারতের রাজধানী দিল্লি সফরে যাচ্ছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২২ থেকে ২৫ নভেম্বরের মধ্যেই দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন মমতা। এই সফরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন তিনি।
বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমান্তবর্তী এলাকায় বিএসএফের এলাকা বৃদ্ধির প্রসঙ্গ উঠে আসতে পারে। সরাসরি এই বিষয়ে আপত্তির বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীকে জানাতে পারেন মমতা। কারণ রাজ্যে বিএসএফের সীমানা বৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছিলেন মমতা। এ নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভায় প্রস্তাবও পাস হয়েছে।
সম্প্রতি পশ্চিমবঙ্গের সিতাইয়ে গরুপাচারকারী সন্দেহে বিএসএফের গুলিতে তিনজনের মৃত্যু হয়েছে। এরপর থেকেই বিএসএফের বিরুদ্ধে শোরগোল পড়ে গেছে পশ্চিমবঙ্গে। তৃণমূল কংগ্রেস নেতারা বিএসএফের ক্ষমতা বৃদ্ধির বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন।
এ ছাড়া ওই বৈঠকে পশ্চিমবঙ্গের আর্থিক পাওনা নিয়েও আলোচনা হতে পারে। ২০২০-২১ অর্থবর্ষে জিএসটি বাবদ দুই হাজার কোটি রুপি প্রাপ্য বাংলার। পাশাপাশি ঘূর্ণিঝড় আম্পান ও ইয়াস মোকাবিলা বাবদ ৩২ হাজার কোটি রুপি পাওনা রয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকল্প আবাস যোজনা, সড়ক যোজনা, ন্যাশনাল হেলথ মিশন, জল জীবন মিশনসহ একগুচ্ছ প্রকল্পের রুপি বকেয়া রয়েছে রাজ্যের। সেই পাওনা অর্থ মেটানোর জন্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
একই সঙ্গে দিল্লি সফরে আরও একাধিক কর্মসূচি রয়েছে তৃণমূল নেত্রীর। সূত্রের খবর, বিভিন্ন বিরোধী দলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন মমতা। সম্প্রতি কৃষি আইন বাতিল করার ঘোষণা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। সেই ইস্যু নিয়েও কথা হতে পারে বিরোধী নেতাদের সঙ্গে।
প্রসঙ্গত, আগামী ২৯ নভেম্বর থেকে ভারতের সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হচ্ছে। তার আগে মমতার এই সফর যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে।
উল্লেখ, এর আগে একুশের বিধানসভা ভোটে জয়ের পর বাদল অধিবেশন চলাকালীন দিল্লি গিয়েছিলেন মমতা। সেবার দিল্লিতে গিয়ে বিরোধী ঐক্যের সুর জাগিয়ে তুলেছিলেন তিনি। কিন্তু এবার কংগ্রেসকে বাইরে রেখেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের সুর তুলেছেন তিনি। কাজেই শীতকালীন অধিবেশনের আগে মমতার এই দিল্লি সফরে কোন রণকৌশল রয়েছে তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে ভারতের জাতীয় রাজনৈতিক মহলে। দিল্লি সফর মমতার গভীর রাজনৈতিক সমীকরণ রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।
কারণ গতবার বাদল অধিবেশন চলাকালীন দিল্লি গিয়েছিলেন তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমো। তারপর একাধিক রাজ্য থেকে মমতার দল তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান বেড়েছে। ত্রিপুরা, গোয়া, উত্তর প্রদেশে একাধিক রাজনৈতিক নেতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন। ফলে এবার লোকসভা অধিবেশন শুরুর আগে তৃণমূল কংগ্রেস সুপ্রিমোর দিল্লি সফরকে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে দেখছে বিজেপিও।
এদিকে এরই মধ্যে শোনা যাচ্ছে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দিল্লি সফরে বিজেপির হেভিওয়েট নেতা তৃণমূল কংগ্রেসে যোগদান করতে পারেন। সেই খবরের সূত্র ধরেই বরুণ গান্ধীর নাম ভাসছে রাজনৈতিক মহলে।