রোববার ভারতে ‘জনতা কারফিউ’ ঘোষণা

ভারতে করোনাভাইরাসের আক্রমণ হেলাফেলার বিষয় নয়, বৃহস্পতিবার রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে একথা বারবার মনে করিয়ে দেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি দেশবাসীর কাছে চাইলেন আগামী কয়েক সপ্তাহ।
এদিন ভাষণের শুরুতেই মোদি বলেন, ‘বন্ধুরা, আপনাদের কাছে যতবার যা চেয়েছি, আপনারা নিরাশ করেননি। আপনাদের আশীর্বাদ পেয়ে এসেছি। সবাই মিলে আমরা এগিয়ে চলছি। ১৩০ কোটি দেশবাসীর কাছে আগামী কয়েকটা সপ্তাহ চাইছি। আপনাদের সময় চাই।’ এরপরই রোববার ‘জনতা কারফিউ’ ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী।
করোনাভাইরাসের মোকাবিলায় দেশবাসীকে ঘরে থাকার পরামর্শ দেন মোদি। সেই অভ্যাস তৈরি করতে রোববার (২২ মার্চ) জনতা কারফিউ পালনের বার্তা দিলেন তিনি।
মোদি বলেন, ‘আগামী রোববার সকাল ৭ থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত দেশবাসীকে ‘জনতা কারফিউ’ পালনের অনুরোধ করছি। ওইদিন কোনো নাগরিক ঘরের বাইরে বেরোবেন না। রাস্তায় যাবেন না। পাড়াতেও কারো সঙ্গে মিশবেন না। নিজের ঘরেই থাকুন। জরুরি কাজের সঙ্গে যুক্তদেরতো বাইরে বেরোতেই হবে। তবে সাধারণ নাগরিকরা আত্মসংযমের কর্তব্য পালন করুন।’
মোদি আরো বলেন, ‘২২ মার্চ জনতা কারফিউর সাফল্য ও অভিজ্ঞতা আমাদের আসন্ন চ্যালেঞ্জে মোকাবিলার পাথেয় হবে। এজন্য রাজ্য সরকারগুলোকে নেতৃত্ব দিতে অনুরোধ করছি। এনসিসি, এনএসএস, যুব সংগঠন ও খেলাধুলার সংগঠনগুলো এগিয়ে আসুন। সবার কাছে জনতা কারফিউ সফল করার আবেদন করছি।’
মোদি বলেন, ‘রুটিন চেকআপের জন্য হাসপাতালে যাতে না যেতে হয় সেই চেষ্টা করুন। প্রয়োজনে আপনার কাছের পরিচিত চিকিৎসককে ফোন করে নিন। দেশে যাতে খাবার ও নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের অভাব না হয়, তার জন্য সবরকম ব্যবস্থা করা হচ্ছে। সারা দেশের জন্য ‘কোভিড ১৯ ইকনমিক টাস্ক ফোর্স’ তৈরি করা হচ্ছে। কারণ এই ভাইরাসে দেশের অর্থনীতিতে বড় প্রভাব ফেলবে।’
তিনি বলেন, ‘আগে যখন যুদ্ধ পরিস্থিতি হত, তখন বিভিন্ন জায়গায় ব্ল্যাক আউট করে দেওয়া হত। যুদ্ধ না হলেও ব্ল্যাকআউটের ড্রিলও হতো। আগামী কয়েক সপ্তাহ বাড়ি থেকেই কাজ করার চেষ্টা করুন। খুব প্রয়োজন ছাড়া বাইরে বেরোবেন না। আপনি যদি মনে করেন যে, আপনি ঠিক আছেন, আপনার কিছু হবে না। এই ভেবে যদি সব জায়গায় ঘোরাফেরা করেন, তাহলে আপনি ঠিক নন। আপনি আপনার পরিবারের সঙ্গে অন্যায় করবেন।’
মোদি বলেন, ‘সামাজিক দূরত্ব অত্যন্ত জরুরি। সংকল্প বা সংযমের দ্বারাই এই ভাইরাস থেকে বাঁচতে হবে।’