ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা বাতিলে আপিল করবেন না ট্রাম্প
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2017/02/14/photo-1487065937.jpg)
ক্ষমতায় বসেই নির্বাহী আদেশবলে যুক্তরাষ্ট্রে ভ্রমণে সাত মুসলিম দেশের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। কিন্তু দুইদিন পরই ওই আদেশ বাতিল করে দিয়েছিলেন দেশটির আদালত।
সর্বশেষ ট্রাম্প প্রশাসনের করা একটি আপিলে আদালতের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আবেদন জানানো হয়। বিচারকাজে অংশ নেন তিনজন বিচারপতি। তাঁরা সবাই স্থগিতাদেশের পক্ষে অবস্থান নেন।
ফেডারেল আদালতে হেরে বিচারকদের ওপর ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়াও দেখিয়েছিলেন ট্রাম্প। নিজের টুইটে ‘যুক্তরাষ্ট্রে কিছু হলে ওই বিচারক ও বিচারব্যবস্থা দায়ী থাকবে’—এমনটাও লিখেছিলেন তিনি। কিন্তু পরবর্তী আইনি পদক্ষেপের বিষয়ে কিছু বলেননি তিনি।
সর্বশেষ ট্রাম্প প্রশাসন প্রেসিডেন্টের ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে আইনি লড়াই না চালিয়ে যাওয়ার কথাই বলছেন।
স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার বিচার বিভাগের ফাইল থেকে জানা গেছে, ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে গত সপ্তাহে দেওয়া ফেডারেল আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পক্ষে আইনি লড়াই অব্যাহত থাকার কথা বলা হলেও কার্যকরী কোনো পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করা হয়নি।
বিচার বিভাগের এটর্নি মিশেল বেনেট স্বাক্ষরিত ফাইল থেকে যে তথ্য পাওয়া যায় তাতে ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের পক্ষে সুপ্রিম কোর্টে আপিলের কোনো সম্ভাবনার কথা উল্লেখ নেই। বরং তাতে বলা হয়েছে, আদালতে পরপর দুবার পরাজিত হওয়ার পর তৃতীয় ধাপেও ট্রাম্প প্রশাসনের জয় পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
এর আগে হোয়াইট হাউসের মুখপাত্র শন স্পাইসার এক বিবৃতিতে জানিয়েছিলেন, ফেডারেল কোর্টের আপিল বিভাগের রায়ের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যাওয়ার কোনো পরিকল্পনা করছেন না তাঁরা। বরং প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের নতুন কোনো নির্বাহী আদেশ জারির আভাস দিয়েছিলেন তিনি। এবার একই কথা জানালেন ডোনাল্ড ট্রাম্পও।
বিবিসি ও রয়টার্সের খবরে জানানো হয়, স্থানীয় সময় শুক্রবার দুপুরে ফ্লোরিডা থেকে ওয়াশিংটন যাওয়ার পথে এয়ারফোর্স ওয়ানে বসে সাংবাদিকদের একটি সংক্ষিপ্ত সাক্ষাৎকার দেন ট্রাম্প। সেখানে তিনি বলেন, ‘আমরা লড়াইয়ে (আইনি লড়াইয়ে) জিতবই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে একটু সময় লাগবে। তবে জিতব আমরাই। এ ছাড়া আমাদের হাতে আরো নানা বিকল্প আছে। আমরা এখনই একটি একেবারে নতুন আদেশ (ব্র্যান্ড নিউ অর্ডার) জারি করতে পারি।’
ট্রাম্প বলেন, ‘এটাকে (ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার ব্যাপারে ফেডারেল আদালতের স্থগিতাদেশ) হয়তো সুপ্রিম কোর্টে টেনে নেওয়া যায়। কিন্তু আমাদের কাজের তালিকায় সেটি নেই। নতুন আদেশ জারিই ভালো সমাধান।’
এ সময় সাংবাদিকরা ট্রাম্পের কাছে নতুন আদেশের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগের আদেশের সঙ্গে এর ‘খুব সামান্যই’ পার্থক্য থাকবে।
এদিকে, ট্রাম্পের এ ঘোষণার পর নতুন নির্বাহী আদেশের বিষয়ে আবারও কথা বলেছে হোয়াইট হাউস। স্থানীয় সময় শুক্রবার হোয়াইট হাউসের আরেক মুখপাত্র জানান, দেশকে সন্ত্রাসবাদ থেকে দূরে রাখতে নতুন আরেকটি নির্বাহী আদেশ জারির কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন। চলতি সপ্তাহেই নতুন ওই আদেশ জারি হতে পারে।
ট্রাম্প মুসলিমপ্রধান সাতটি দেশ থেকে নাগরিকদের ৯০ দিন এবং সব শরণার্থীকে ১২০ দিনের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশে সাময়িক নিষেধাজ্ঞা জারি করে। বিষয়টি আদালতে গড়ালে আদালত তা স্থগিত করে দেন।