এবার ভারতের শিক্ষামন্ত্রীর সনদ যাচাইয়ের দাবি
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/06/13/photo-1434200880.jpg)
ভারতের কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী (এইচআরডি- শিক্ষা) স্মৃতি ইরানির ডিগ্রি আসল কিনা তা যাচাইয়ের দাবি জানিয়েছে আম আদমি পার্টি (এএপি)। গতকাল শুক্রবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে আম আদমি পার্টির নেতা সঞ্জয় সিং এ দাবি করেন।
স্মৃতি ইরানি শুধু ভারতে বিজেপি সরকারের সবচেয়ে কমবয়সী মন্ত্রীই নন, টিভি সিরিয়াল ‘কিঁউ কি সাস ভি কভি বহু থি’র জনপ্রিয় অভিনেত্রী হিসেবে খুবই সুপরিচিত নাম। ১০ বছর আগে রাজনীতিতে পা দেওয়ার পর থেকে তুখোড় বাগ্মী সাংসদ হিসেবেও নাম কুড়িয়েছেন তিনি।
নরেন্দ্র মোদির সরকারে শিক্ষা বা মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পাওয়ার পর জানুয়ারি মাসে স্মৃতির বিরুদ্ধে প্রথম বোমা ফাটান কংগ্রেস নেতা অজয় মাকেন। তিনি টুইট করে বলেন, নতুন শিক্ষামন্ত্রী তো গ্র্যাজুয়েটও নন।
এরপর কংগ্রেস আনুষ্ঠানিকভাবে তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যে হলফনামা পেশ করার অভিযোগ আনে এবং বলে, ভারতে যেসব দিকপালরা এই মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব সামলেছেন, তাঁদের পাশে তিনি নেহাতই বেমানান।
কংগ্রেস মুখপাত্র অভিষেক মনু সিংভি বলেন, ‘যেখানে মওলানা আজাদ, ফখরুদ্দিন আলী আহমেদ, প্রফেসর নুরুল হাসান, ভিআরভি রাও, সিদ্ধার্থশঙ্কর রায় বা মুরলি মনোহর জোশির মতো ব্যক্তিরা এই মন্ত্রণালয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন, সেখানে তিনি কোথায়?’
মনু সিংভি তাঁর টুইটে আরো বলেন, ‘তা ছাড়া মাত্র ১২ ক্লাস পাস হয়েও তিনি স্নাতক বলে নিজের হলফনামা দিয়েছেন, যেটা অপরাধ। এই মন্ত্রণালয়ে তাঁকে কিছুতেই শোভা পায় না।’
সিংভি আরো বলেন, ‘আরো অনেক মন্ত্রীও হয়তো ক্লাস সিক্স বা এইট পাস, কিন্তু তাদের নিয়ে আমরা প্রশ্ন তুলছি না – এখানে প্রশ্ন তুলছি এটা শিক্ষা মন্ত্রণালয় বলেই।’
এর আগে গত ৯ জুন বৃহস্পতিবার এএপির সদস্য দিল্লির আইনমন্ত্রী জিতেন্দ্র সিং তোমরের জাল অভিযোগ উত্থাপনের পর তিনি তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং পুলিশ তাঁকে আটক করে।
আম আদমির একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার বরাতে টাইমস অব ইন্ডিয়া জানায়, তোমরের পদত্যাগের পর দলটি সতর্ক অবস্থান নেওয়ার পাশাপাশি বিজেপি নেতা ও মন্ত্রীর বিরুদ্ধেও শিক্ষা সনদ জালিয়াতির অভিযোগ উত্থাপন করল।
সংবাদ সম্মেলনে সঞ্জয় সিং স্মৃতি ইরানির পাশাপাশি মানবসম্পদ প্রতিমন্ত্রী রাম শঙ্কর কাথেরার বিরুদ্ধেও অভিযোগ উত্থাপন করেন। তাঁর সনদ আসল কি না, তা তদন্তের দাবি জানান।
এদিকে বিজেপির এক নেতা টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, তোমরকে গ্রেপ্তারের ফলে যে স্বচ্ছ ভাবমূর্তি নিয়ে আম আদমি দিল্লির ক্ষমতায় এসেছিল, সেই ভাবমূর্তিই প্রশ্নের মুখে। যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রচার চালিয়ে স্বচ্ছতার ইমেজকে অগ্রাধিকার দেওয়া আম-আদমি পার্টির মুখ্য উদ্দেশ্য, সেই দলের ভেতরে এমন দুর্নীতি ফাঁস হওয়ায় ঘরে-বাইরে কার্যত অস্বস্তির মুখে পড়ল দিল্লির আম আদমি সরকার।
এদিকে তোমরের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৪২০ (প্রতারণা), ৪৬৭ জালিয়াতি, ৪৬৮ (প্রতারণার উদ্দেশ্যে জালিয়াতি) এবং ১২০ বি (অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র) মামলা দেওয়া হয়েছে।