আমির খানের মতো আমাকেও ... : এ আর রহমান
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2015/11/25/photo-1448445255.jpg)
ভারতে বেড়ে চলা ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বিষয়ে অভিনেতা আমির খানের করা মন্তব্যের সঙ্গে একমত পোষণ করেছেন অস্কারজয়ী সুরকার এ আর রহমান। তিনি বলেছেন, গত সেপ্টেম্বরে এমন একটি পরিস্থিতির মুখোমুখি তাঁকেও হতে হয়েছে। সে সময় মুসলমানদের একটি পক্ষ তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া জারি করে।
টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, গোয়ার পানাজিতে ৪৬তম আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে এসব কথা বলেন এ আর রহমান।
ইরানের ছবি ‘মুহাম্মদ (সা.) : মেসেঞ্জার অব গড’ ছবিতে সুরকার হিসেবে কাজ করায় মুম্বাইভিত্তিক রেজা একাডেমি তাঁর বিরুদ্ধে ফতোয়া দেয় বলে জানান এ আর রহমান। রেজা একাডেমির দাবি, ইরানের এই ছবিটিতে মুসলমানদের মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-কে অপমান করা হয়েছে।
এ আর রহমান বলেন, ‘কয়েক মাস আগে আমাকেও এই ধরনের একটি পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যেতে হয়েছিল। কোনো কিছুই সহিংস হওয়া উচিত নয়। আমরা সবাই অতি সভ্য মানুষ এবং আমাদের উচিত পৃথিবীকে এটা দেখানো যে আমরা সবচেয়ে সভ্য জাতি।’
বিশ্বখ্যাত এই সুরকারের বিরুদ্ধে ফতোয়া দেওয়ায় সে সময় দিল্লি এবং উত্তর প্রদেশে তাঁর দুটি নির্ধারিত কনসার্ট বাতিল করা হয়।
এদিকে ফতোয়ার ঘটনার পর একটি কট্টরপন্থী হিন্দুদের একটি সংগঠন এ আর রহমানকে আবারও হিন্দু ধর্মে ফিরে আসার আহ্বান জানায়। এবং এটাকে তারা ‘ঘরে ফিরে আসা’ বলে নামকরণ করে।
দেশজুড়ে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রতিবাদে বিভিন্ন শিল্পীদের পুরস্কার ফেরত দেওয়া প্রসঙ্গে রহমান বলেন, ‘সবকিছু খুব দারুণ করে হচ্ছে। আমার মনে হচ্ছে তাঁরা যা করছেন তা খুবই কাব্যিক। পৃথিবীর কাছে আমাদের একটা উদাহরণ তৈরি করা দরকার। কারণ আমরা সেই দেশ থেকে এসেছি যেটা মহাত্মা গান্ধীর দেশ। তিনিই দেখিয়েছেন যে কীভাবে কোনো রকম সহিংসতা ছাড়াই একটি বিপ্লব করা সম্ভব।’
ভারতে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে যাঁরা জাতীয় পুরস্কার ফিরিয়ে দিয়েছিলেন, তাঁদের পাশে ছিলেন আমির খান। গত সোমবার নয়াদিল্লিতে এক পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এই বলিউড অভিনেতা জানান, সাত থেকে আট মাস ধরে তিনি ও তাঁর পরিবার ভারতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। পরিবার ও তিন সন্তানের নিরাপত্তার জন্য তাঁর স্ত্রী কিরণ রাও দেশ ছাড়ার কথাও বলেছেন বলে উল্লেখ করেন তিনি।
আমির খান বলেন, ‘আমি আতঙ্কিত। আমার স্ত্রী ভারতের বাইরে চলে যাওয়ার কথা বলছে।’ তিনি বলেন, ‘কিরণ খুবই ভয় পেয়েছে। কী থেকে কী হয়, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছি আমরা সবাই। আমাদের ওপর যদি হামলা হয়?’