ছয় বছর পর বাবার ভিটায় এরশাদ, ফুলেল শুভেচ্ছা

দীর্ঘ ছয় বছর পর বাবার ভিটায় এলেন বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ। তাঁর বাবার ভিটা ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার দিনহাটায়। আজ মঙ্গলবার এইচ এম এরশাদকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়েছেন কোচবিহারের বাসিন্দারা।
এরশাদের আগমন উপলক্ষে আজ সকাল থেকেই দিনহাটা শহরজুড়ে মানুষের মধ্যে উৎসাহের কমতি ছিল না। চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্ত এলাকায় এরশাদকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানান ভারত-বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক ও ছিটমহল আন্দোলনের অন্যতম নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্ত। চ্যাংড়াবান্ধা সীমান্তে প্রায় এক হাজারের ওপর মানুষ এইচ এম এরশাদকে সংবর্ধনা জানায়।
ভারতের মাটিতে পা রেখে এইচ এম এরশাদ বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দীর্ঘদিনের এই ছিটমহল সমস্যা সমাধানের জন্য ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে অসংখ্য ধন্যবাদ। মোদির এই উদ্যোগে দুই দেশের বহু রাষ্ট্রহীন মানুষ আজ মাথার ওপর রাষ্ট্রের নিরাপত্তা পেলেন।’
তিস্তার পানি বণ্টন প্রসঙ্গে এইচ এম এরশাদ বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বিশেষ করে উত্তরবঙ্গের মানুষ তিস্তার পানির আশায় রয়েছে। শুধু মুখের প্রতিশ্রুতি নয়, বাংলাদেশের মানুষ চায় তিস্তার পানি।’ এই পানি না পাওয়া পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষ যে উদ্বেগে আছে সে কথাও স্মরণ করিয়ে দেন এরশাদ।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, বাংলাদেশের সাবেক রাষ্ট্রপতি ও সেনাপ্রধান এরশাদের শৈশব কেটেছে পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার এই দিনহাটা শহরে। তিনি দিনহাটা হাইস্কুলে পড়াশোনা করেন। পরবর্তীকালে তিনি বাংলাদেশে চলে যান। ২০০৯ সালের ৬ ডিসেম্বর এরশাদ শেষবারের মতো দিনহাটায় এসেছিলেন। ওই সময় তাঁকে দিনহাটা হাইস্কুলসহ বিভিন্ন সংগঠন তাঁকে সংবর্ধনা দেয়। দীর্ঘ ছয় বছর পর আবার নিজের ভিটায় এলেন এরশাদ।
সীমান্ত পেরিয়ে এরশাদ সোজা চলে যান তাঁর পৈতৃক ভিটাতে। দিনহাটায় দুদিন থেকে তারপর তাঁরা উত্তরবঙ্গের ডুয়ার্সে বেড়াতে যাবেন বলেও জানা গেছে। এরশাদের সঙ্গে তাঁর পরিবারের আরো কয়েকজন সদস্য আছেন।
এরশাদের ভাই তোজাম্মেল হোসেন বলেন, ‘অনেকদিন পর দাদা বাড়িতে আসছেন। তাই শুধু পরিবারের মানুষজনই নয়, এলাকার লোকজনও খুশিতে রয়েছে।’ দিনহাটার বিধায়ক উদয়ন গুহ বলেন, ‘কাকাবাবু (এরশাদ) অনেকদিন পর দিনহাটায় এলেন। অবশ্যই ওনার সঙ্গে দেখা করতে যাব।’
এরশাদের সঙ্গে দেখা করে শুভেচ্ছা জানানোর জন্য স্থানীয় বাসিন্দারা ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছেন। অনেকেই এ দিন এরশাদকে এক ঝলক দেখার জন্য তাঁর পৈতৃক বাড়িতে গিয়ে ভিড় জমান।
ভারত বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার রক্ষা সমন্বয় কমিটির সমন্বয়ক দীপ্তিমান সেনগুপ্ত জানান, কমিটি আগামীকাল বুধবার এইচ এম এরশাদকে সংবর্ধনা দেবে।