ধর্মের কারণে সংঘাত হচ্ছে ২০০০ বছর ধরে!

দুই হাজারেরও বেশি সময় ধরে ধর্মীয় সংঘাত মানবসমাজকে বিভক্ত করে আসছে। বিজ্ঞানীরা এ দাবি করেছেন।
মেক্সিকোয় খ্রিস্টপূর্ব ৭০০ অব্দের কয়েকটি প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন নিয়ে নতুন গবেষণায় এমন সত্যই উঠে এসেছে বলে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন। ধর্ম প্রাচীন সমাজব্যবস্থাকে ঐক্যবদ্ধ করেছে-দীর্ঘদিন ধরে লালিত হয়ে আসা এই বিশ্বাসের বিপরীতে গেছে এই গবেষণার ফলাফল।
কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয় ও সেন্ট্রাল ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের বিশ্বাস, ধর্ম প্রাচীন সমাজব্যবস্থাকে ঐক্যবদ্ধ করার বদলে উল্টো প্রভাব বিস্তার করে থাকতে পারে।
মেক্সিকোর প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে রিও ভার্দে উপত্যকা ও ওয়াক্সাকা উপত্যকায় সাত বছর গবেষণা করেছেন অধ্যাপক আর্থার এ জয়সি ও সহকারী অধ্যাপক সারাহ বারবারা। তাঁরা গবেষণায় জানতে পেরেছেন, স্থানীয় ধর্মীয় আচার-আচরণ ছোট সম্প্রদায়কে শক্তিশালী করেছে। যার কারণে বড় রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠাগুলোর উন্নয়নে বিলম্বিত হয়েছে।
খ্রিস্টপূর্ব ৭০০ থেকে ২৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত প্রত্নতাত্ত্বিক এলাকার ইতিহাস নিয়ে গবেষণায় তাঁরা জানতে পেরেছেন, অভিজাতরা মানুষের ধর্মীয় জীবনের ওপর কর্তৃত্ব স্থাপনের পাশাপাশি সম্প্রদায়গুলো ও তাঁদের ঈশ্বরের মধ্যে যোগাযোগও নিয়ন্ত্রণ করতেন। যার কারণে ঐতিহ্যবাহী সম্প্রদায়ের নেতাদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব দেখা দেয়। এরপর ঘটনাক্রমে পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত শহর মন্টে আলবানকে রাজধানী করে একটি আঞ্চলিক রাষ্ট্র গঠিত হয়।
রিও ভার্দে উপত্যকার নিম্নাঞ্চলে ধর্মীয় সংঘাতের কারণে বড় বড় মন্দিরগুলোর সঙ্গে ধর্মীয় শক্তি সেন্টারগুলোর দ্রুত পতন হয়। এই মন্দিরগুলো ১০০ খ্রিস্টাব্দে নির্মিত হয়। মাত্র এক শতাব্দী পরই এগুলো পরিত্যক্ত হয়।
অধ্যাপক জয়সি বলেন, ‘ওয়াক্সাকা উপত্যকা ও রিও ভার্দে উপত্যকার নিম্নাঞ্চলে প্রাচীন শহর ও রাষ্ট্র গঠন এবং ইতিহাসে ধর্ম খুব গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু এটি ভিন্ন পথে বিস্তৃত হয়েছে। সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে আজ ধর্মের যে ভূমিকা, তা খুব বিস্ময়কর নাও হতে পারে।’