নিষিদ্ধ হলো ইসরায়েলি-ফিলিস্তিনি প্রেমকাহিনী
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/01/02/photo-1451738206.jpg)
আক্ষরিক অর্থে এটি এক প্রেমকাহিনী। একজন ইসরাইলি নারী আর ফিলিস্তিনি পুরুষের প্রেমগাথা। যেখানে আশা করা হয়েছে, সদা বিবদমান দুটি অঞ্চলের মানুষের মধ্যে একসময় ঐক্য ফিরে আসবে।
উপন্যাসটি ইসরায়েলের পাঠ্যক্রমে অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। তবে শিক্ষা কার্যক্রম থেকে বইটি সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে দেশটির শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কারণ হিসেবে মন্ত্রী নাফতালি বেনেট বলছেন, এই বইয়ের মাধ্যমে দুই জাতির মানুষের মধ্যে অবাধ মেলামেশা বাড়বে এবং ইহুদিদের জাতিগত শুদ্ধতা নষ্ট হবে।
‘বর্ডার লাইফ’ নামে আলোচিত এই উপন্যাসটি লিখেছেন ইসরায়েলের সবচেয়ে সম্মানিত লেখক ডরিট রাবিনইয়ান। সেখানে বলা হয়েছে হিলমি নামে এক ফিলিস্তিনি চিত্রশিল্পীর গল্প। আর আছে ইসরায়েলের দোভাষী লিয়াটের কথা। কাজের সূত্রে নিউইয়র্কে যাদের পরিচয় হয়। আর সেখানেই পরিচয় থেকে প্রেম। তাঁদের সম্পর্কের মধ্য দিয়েই উঠে আসে ইসরাইল-ফিলিস্তিনের সম্পর্কের টানাপড়েন। কিন্তু সম্পর্কটি ভাঙে না। তবে যখন হিলমি রামাল্লায় ফিরে যান এবং লিয়াত ফিরে যান পশ্চিম তীরে, তখন শুরু হয় তাঁদের বিচ্ছেদ জীবনের পথচলা।
শিক্ষকদের অনুরোধে এই উপন্যাসটি পাঠ্যক্রমের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শিক্ষাবিদদের নিয়ে গঠিত একটি কমিটি পর্যালোচনা করে উপন্যাসটি পাঠ্যক্রমের জন্য উপযুক্ত ঘোষণা করে। তবে ইসরাইলের শিক্ষা মন্ত্রণালয় কমিটির মতামত গ্রহণ করেনি।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা ডালিয়া ফেনিগ তাদের সিদ্ধান্তের পক্ষে যুক্তি দিয়ে হারেটজ সংবাদপত্রকে জানিয়েছেন, বেশির ভাগ ইসরাইলি মনে করেন উপন্যাসটি তাদের সংস্কৃতির জন্য হুমকিস্বরূপ। ইহুদিদের সঙ্গে অ-ইহুদিদের সম্পর্ক, প্রেম ও বিয়ের অনুমতি দিয়ে যদি কোনো গল্পও লেখা হয় তবে তা তাদের ধর্মের স্বাতন্ত্রকে নষ্ট করে।
সেই সঙ্গে ইসরায়েলের তরুণ সমাজকে এই উপন্যাসের মাধ্যমে অনুপ্রাণিত হয়ে কোনো আরব নারী বা পুরুষের সঙ্গে সম্পর্কে না জড়াতে আহ্বান জানিয়েছেন লেনিগ।
তবে এ বিষয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে ইসরায়েলের বিরোধী দল। সরকারের এই সিদ্ধান্তকে তারা বর্ণবাদী আচরণ বলে মন্তব্য করেছে। সেই সঙ্গে আরব দেশের নাগরিকদের সাধারণ মানুষ হিসেবে বিবেচনা করতেও অনুরোধ করেছে তারা।
দেশটির বিভিন্ন স্কুলের প্রধান শিক্ষকদের সংগঠন সরকারের এ সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের আহ্বান জানিয়েছে। অবশ্য এখন পর্যন্ত ইসরায়েল সরকারের পক্ষ থেকে সিদ্ধান্ত পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনার কথা জানানো হয়নি।