‘মাটি-ঘাস-পাতা খেয়ে বেঁচে আছে মানুষ’
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/01/08/photo-1452225993.jpg)
মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশ সিরিয়ার অবরুদ্ধ শহর মাদায়ায় ভয়াবহ মানবিক বিপর্যয় দেখা দিয়েছে। ছয় মাসের বেশি সময় ধরে অবরোধ আরোপের ফলে সেখানে খাদ্যের অভাবে এখন পর্যন্ত ৬০ জন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
আন্তর্জাতিক সাহায্য সংস্থাগুলো বলছে, পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে সেখানকার মানুষ খাদ্যের অভাবে এখন মাটি-ঘাস-লতাপাতা খেয়ে জীবনধারণের চেষ্টা করছে। কিন্তু শীতকাল বিধায় সেগুলোও শুকিয়ে যাচ্ছে।
মাদায়া শহরের বাসিন্দা আবদেল ওয়াহাব আহমেদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানিয়েছে, না খেতে পেরে গতকাল বৃহস্পতিবার দুজন সেখানে মারা গেছেন।
আবদেল ওয়াহাব আহমেদ বলেন, সরকারি বাহিনী ও হিজবুল্লাহ যোদ্ধারা ওই শহরটিতে অবরোধ আরোপের পর থেকে এ পর্যন্ত অন্তত ৬০ জন মানুষ মারা গেছেন।
সিরিয়ার রাজধানী দামেস্ক থেকে মাত্র ২৫ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে এবং লেবানন সীমান্তের ১১ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এ শহরটি।
শহরের পরিস্থিতির বর্ণনা দিয়ে বৃহস্পতিবার আবদেল ওয়াহাব আহমেদ বলেন, ‘দুইশ দিন ধরে মাদায়া অবরুদ্ধ হয়ে আছে। আজ দুজন মারা গেছেন। এখানকার লোকজন এখন মাটি-ঘাস-গাছের পাতা খাচ্ছেন। কারণ, তাঁদের খাবারের জন্য আর বিশেষ কিছু অবশিষ্ট নেই। এখন পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে। শীতের কারণে সব ঘাস-পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে।’
যদিও সরকারিভাবে সেখানকার মৃত্যুর প্রকৃত তথ্য এখনো জানা যাচ্ছে না। মাদায়ায় কর্মরত একটি আন্তর্জাতিক চিকিৎসাসেবা সংস্থা জানিয়েছে, ডিসেম্বরে তাদের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সেবা নিতে আসা অভুক্ত মানুষের মধ্যে ২৩ জনই মারা গেছেন।
সেভ দ্য চিলড্রেন জানিয়েছে, স্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে চিকিৎসাসামগ্রীর চরম অভাব রয়েছে। মাদায় যদি জরুরি ভিত্তিতে খাবার, চিকিৎসাসামগ্রী, জ্বালানি সরবরাহ করা না যায়, তাহলে সামনে আরো শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটবে।
মাদায়ার হাসপাতালগুলোর বর্ণনা দিয়ে আবদেল ওয়াহাব আহমেদ বলেন, ‘সেখানকার অবস্থা খুবই ভয়াবহ। সেখানে কোনো চিকিৎসাসামগ্রী নেই। অবরোধ আরোপের পর থেকেই এখানে এ অবস্থা বিরাজ করছে। কোনো ওষুধ নেই, বিছানা নেই, অ্যাম্বুলেন্স নেই।’
এখানকার মানুষকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে অবরোধ তুলে নেওয়ার আহ্বান জানান আবদেল ওয়াহাব আহমেদ।
এদিকে জাতিসংঘ জানিয়েছে, সিরিয়া সরকার মাদায়ায় মানবিক সাহায্য পৌঁছাতে রাজি হয়েছে। বড় ধরনের কোনো সমস্যা না হলে আগামী সোমবারের মধ্যে সেখানে খাদ্যসামগ্রী নিয়ে ট্রাক পৌঁছাবে।