সাত নবজাতক হত্যায় অভিযুক্ত নার্স
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2023/08/18/us-nar.jpg)
নিজের কর্মস্থলে অর্থাৎ, হাসপাতালে সাত নবজাতককে হত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছেন একজন ব্রিটিশ সেবিকা (নার্স)। এ ছাড়া আরও ছয় শিশুকে নবজাতক ইউনিটে হত্যার চেষ্টার অভিযোগেও অভিযুক্ত হয়েছেন ওই নার্স। আজ শুক্রবার (১৮ আগস্ট) যুক্তরাজ্যের ম্যানচেস্টারের একটি আদালত তাকে অভিযুক্ত করেন। এর মাধ্যমে দেশটির ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি শিশু হত্যাকারী হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেন তিনি। খবর এএফপির।
প্রতিবেদনে ফরাসি সংবাদ সংস্থাটি জানিয়েছে, ঘাতক ওই নার্সের নাম লুসি লেটবি। গত বছরের অক্টোবর মাস বিচারের মুখোমুখি হয়েছেন ৩৩ বছর বয়সী ওই নার্স। এক অপরিপক্ত নবজাতককে অতিরিক্ত দুধ খাওয়ানো, ইনজেকশনের মাধ্যমে বাতাস ও বিষ প্রয়োগের অভিযোগ ওঠে ওই নার্সের বিরুদ্ধে।
ম্যানচেস্টার ক্রাউন কোর্টের বাইরে ভুক্তভোগী পরিবারগুলো এক যৌথ বিবৃতিতে জানিয়েছে, তাদের পরিবারের সঙ্গে যা হয়েছিল, তাতে তার স্তব্ধ। ন্যায়বিচার হয়েছে জানিয়ে তারা বলেছে, ‘আমাদের সকলের ওপর যে আঘাত, ক্রোধ এবং যন্ত্রণা পড়েছিল ন্যায়বিচারের মাধ্যমেও তা শোধ হবে না।’
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2023/08/18/yuktraajy-in.jpg)
এএফপি জানিয়েছে, এই মামলার প্রথম রায় দেওয়া হয়েছিল গত ৮ আগস্ট। তবে, আদালতের আদেশের কারণে তা প্রকাশ করা হয়নি। ওদিন রায়ের সময় অনেক বিচারকের চোখে পানি চলে আসে। রায়ের সময় অভিযুক্ত লেটবি কান্নায় ভেঙে। তবে, আজকে রায়টি আনুষ্ঠানিকভাবে পড়ার সময় এই নার্স আদালতে উপস্থিত ছিলেন না।
এদিকে, দুটি মামলায় লেটবিকে খালাস দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও ছয় মামলায় এখনও তার বিরুদ্ধে রায় দেওয়া নিয়ে আদালত কোনো অবস্থানে পৌঁছাতে পারেননি। প্রসিকিউটররা অভিযোগের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে ২৮ দিনের মধ্যে বিবেচনা করার জন্য বলেছেন।
লেটবির রায় আগামী সোমবার দেওয়া হবে বলে বার বার বলেছিলেন তার আইনজীবীরা। রায়ের সময় তিনি আদালতে উপস্থিত থাকবেন না বলেও জানিয়েছেন তারা। তবে, এর আগেই আনুষ্ঠানিক রায় প্রকাশ পেল।
২০১৫ সালের জুন থেকে ২০১৬ সালের জুন পর্যন্ত উত্তর-পশ্চিম ইংল্যান্ডের কাউন্টেস অব চেস্টার হাসপাতালের নবজাতক ইউনিটে একের পর এক শিশু মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। এরপরেই লেটবিকে গ্রেপ্তার করা হয়।
লেটবির বিরুদ্ধে আইনজীবীরা আদালতকে বলেছেন, তিনি এমন এক নারী, যিনি হত্যার পর তেমন কোনো ক্লু রাখতেন না।
বিষয়টি বারবার অস্বীকার করে আসছে অভিযুক্ত নার্স। জ্যেষ্ঠ প্রসিকিউটর পাসকেল জোনস এই ঘটনাকে মানুষের বিশ্বাস ভঙ্গ বলে আখ্যায়িত করে বলেন, ‘তিনি বারবার শিশুদের হত্যা করেছেন। তিনি এমন এক পরিবেশে হত্যার মতো জঘন্য কাজগুলো করেছেন, যেখানে কি না শিশুদের জন্য নিরাপদ স্থান হিসেবে ভাবতেন অভিভাবকরা।’
আদালত বলেছেন, ‘লেটবির কাজের সময় একের পর একশিশু মারা যাওয়ায় লেটবির সহকর্মীরা বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। কিছু কিছু নবজাতককে হত্যা করা হয়েছে তাদের বাবা-মা বেড অথবা কেবিন থেকে যাওয়ার পরপরই।’