যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনকে কেন্দ্র করে হামলার উল্লেখযোগ্য ঘটনা
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2024/07/14/haamlaar_itihaas_thaamb.jpg)
যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভানিয়ায় নির্বাচনি সমাবেশে রিপাবলিকান দলের পক্ষে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হত্যার চেষ্টায় হামলা চালানো হয়েছে। অনেক রাজনৈতিক বিশ্লষক ও তদন্তকারীরা এই ঘটনাকে সাবেক প্রেসিডেন্টকে হত্যাচেষ্টা হিসেবে বিবেচনা করছেন। যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতির ইতিহাসে এটি প্রথম কোনো প্রেসিডেন্টের উপর হামলার ঘটনা নয়। এর আগেও গেটিসবার্গের ভাষণের জন্য বিখ্যাত ও যুক্তরাষ্ট্রের সফল প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন, জন এফ কেনেডিসহ একাধিক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীদের উপর বন্দুকধারীদের হামলা নজির রয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের রাজনীতিতে বন্দুকধারীদের কিছু উল্লেখযোগ্য হামলার ঘটনা নীচে তুলে ধরা হলো :
রোনাল্ড রিগান (১৯৮১)
প্রেসিডেন্ট রোনাল্ড রিগান ওয়াশিংটনের হিল্টন হোটেলে একটি অনুষ্ঠান শেষে ফিরবার সময় বন্দুকধারীদের অর্তকিত হামলায় গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। এ ঘটনায় আক্রমণকারী জন হিঙ্কলি জুনিয়রকে ঘটনাস্থল থেকে আটক করে পুলিশ এবং দীর্ঘ ২৩ বছর কারাভোগের পর ২০২২ সালে তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। এই হামলার পর রিগান হাসপাতালে ১২ দিন চিকিৎসাধীন ছিলেন। হামলার ঘটনার পর রিগানের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকে।
জেরাল্ড ফোর্ড (১৯৭৫)
প্রেসিডেন্ট জেরাল্ড ফোর্ড ১৯৭৫ সালের সেপ্টেম্বরে ক্যালিফোর্নিয়ায় দুটি পৃথক হত্যাচেষ্টা হামলার পরও বেঁচে গিয়েছিলেন। এই ঘটনায় আততায়ী হিসেবে একজন নারীকে আটক করা হয়।
জর্জ ওয়ালেস (১৯৭২)
ডেমোক্রেট দলের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী ওয়ালেস নির্বাচনি প্রচারণার সময় মেরিল্যান্ডের একটি শপিং মলে গুলিবিদ্ধ হন। চারটি গুলি তার শরীরে বিদ্ধ হয় বাকী জীবন পঙ্গু হয়ে কাটান।
রবার্ট এফ কেনেডি (১৯৬৮)
প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডির ভাই রবার্ট কেনেডি ডেমোক্রেট দলের পক্ষ থেকে প্রেসিডেন্ট মনোনয়নের জন্য প্রার্থী হয়েছিলেন। ক্যালিফোর্নিয়ার লস অ্যাঞ্জেলেসের অ্যাম্বাসেডর হোটেলে গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি।
এই ঘটনা ১৯৬৮ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে গভীর প্রভাব ফেলেছিল। এই হত্যাকাণ্ড নাগরিক অধিকার নেতা মার্টিন লুথার কিং জুনিয়রকে হত্যার মাত্র দুই মাস পরে সংঘঠিত হয়েছিল যা ষাটের দশকের শেষের দিকে যুক্তরাষ্ট্রের রাজনৈতিক অস্থিরতাকে তীব্র করে তোলে।
জন এফ কেনেডি (১৯৬৩)
১৯৬৩ সালে প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি স্ত্রী জ্যাকির সাথে মোটর গাড়িতে টেক্সাসের ডালাসে লি হার্ভে ওসওয়াল্ড নামের এক ব্যক্তির গুলিতে নিহত হন। ১৯৬৪ সালে কেনেডি হত্যার তদন্তকারী ওয়ারেন কমিশন জানান, লি হার্ভে ওসওয়াল্ড সোভিয়েত ইউনিয়নে বসবাসরত একজন সাবেক মেরিন কর্মকর্তা এবং তিনি একাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/very_big_1/public/images/2024/07/14/haamlaar_itihaas_inaar.jpg)
ফ্রাঙ্কলিন ডি রুজভেল্ট (১৯৩৩)
প্রেসিডেন্ট নির্বাচন র্যালীতে অংশগ্রহণের সময় ফ্লোরিডার মায়ামিতে ফ্রাঙ্কলিন রুজভেল্টকে হত্যার চেষ্টার করা হয়। এই ঘটনায় তিনি অক্ষত থাকলেও শিকাগোর মেয়র অ্যান্টন সেরমাক নিহত হন।
থিওডোর রুজভেল্ট (১৯১২)
ট্রাম্পের মতোই থিওডোর রুজভেল্টও সাবেক প্রেসিডেন্ট হিসাবে দ্বিতীয়বার যখন হোয়াইট হাউসের জন্য প্রার্থী হন তখন উইসকনসিনের মিলওয়াওকিতে তাকে গুলি করা হয়। গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনি নির্ধারিত বক্তৃতা সূচারুভাবে শেষ করেছিলেন।
উইলিয়াম ম্যাককিনলি (১৯০১)
প্রেসিডেন্ট ম্যাককিনলি নিউইয়র্কের বাফেলোতে বিদ্রোহী লিওন জোলগোজের গুলিতে নিহত হন।
আব্রাহাম লিংকন (১৮৬৫)
ওয়াশিংটনের ফোর্ড থিয়েটারে ‘আওয়ার আমেরিকান কাজিন’ নামে একটি নাটক দেখার সময় বিখ্যাত অভিনেতা এবং কনফেডারেট সহানুভূতিশীল জন উইল্কস বুথ গুলি করে হত্যা করেন আব্রাহাম লিংকনকে।
বুথের আক্রমণ আমেরকিার গৃহযুদ্ধে কনফেডারেটদের আত্মসমর্পণের মাত্র কয়েকদিন পরে সংগঠিত হয়। এটি একটি বৃহত্তর চক্রান্তের অংশ ছিল যার মধ্যে ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড্রু জনসন এবং সেক্রেটারি অফ স্টেট উইলিয়াম সিওয়ার্ডকে হত্যার প্রচেষ্টাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।