রাশিয়ার জ্বালানি তেলে নিষেধাজ্ঞা দিল যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য
রাশিয়ার জ্বালানি খাতের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে বিদায়ী মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন প্রশাসন। এই পদক্ষেপের আওতায় রয়েছে বৃহৎ রুশ জ্বালানি তেল কোম্পানি গাজপ্রম নেফটসহ দুই শতাধিক জ্বালানি প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি।
ইউক্রেনে মস্কোর সর্বাত্মক আক্রমণের পর এই প্রথমবারের মতো যুক্তরাজ্য সরকারও দুটি রুশ কোম্পানির ওপর নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দিয়েছে। জ্বালানি তেল কোম্পানি গাজপ্রম নেফট ও সুরগাটনেফত গ্যাসের বিরুদ্ধে ইউক্রেন যুদ্ধে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে অর্থের জোগানের অভিযোগ করছে দেশটি। খবর বিবিসির।
ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ল্যামি বলেছেন, ‘রাশিয়ান তেল কোম্পানিগুলোর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেওয়ায় তাদের যুদ্ধ তহবিল খালি হয়ে যাবে। আমরা পুতিনের হাত থেকে যত রুবল (রাশিয়ান মুদ্রা) ছিনিয়ে নেব, তা ইউক্রেনের মানুষের জন্য তত বেশি সুরক্ষা নিয়ে আসবে।’
মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন বলেছেন, এই পদক্ষেপগুলো (নিষেধাজ্ঞা) রাশিয়ার তেল বাণিজ্যের সঙ্গে সম্পর্কিত রপ্তানি ব্যবস্থাসহ অন্যান্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানকেও ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে।
এ বিষয়ে গতকাল শুক্রবার বাইডেন বলেন, ‘পুতিন এ মুহূর্তে কঠিন অবস্থায় আছেন। তিনি যেসব ভয়াবহ কাজ করে চলেছেন, তা বন্ধ করার জন্য এটা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ কাজ।
এদিকে নিষেধাজ্ঞার ওই খবরে বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় গতকাল বিকেল ৪টা ৪৫ মিনিটে (২১৪৫জিএমটি) ব্রেন্ট ক্রুড তেলের দাম বেড়েছে ব্যারেলপ্রতি ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। এ কারণে প্রতি ব্যারেলের মূল্য দাঁড়িয়েছে ৭৯ দশমিক ৬৮ ডলার।
পেট্রলের দাম সম্পর্কে জানতে চাইলে বাইডেন বলেন, প্রতি গ্যালনে তিন থেকে চার সেন্ট পর্যন্ত বাড়তে পারে। তবে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ‘এ নিষেধাজ্ঞা রাশিয়ার ওপর আরো গভীর প্রভাব ফেলবে।’
অন্যদিকে রাশিয়ার রাষ্ট্রায়ত্ত সংবাদ সংস্থাগুলোর প্রতিবেদনে গাজপ্রম নেফট নিষেধাজ্ঞাকে ‘ভিত্তিহীন’ ও ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে।
কোম্পানির একজন প্রতিনিধির উদ্ধৃতি দিয়ে রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থাগুলো জানায়, তারা গাজপ্রম নেফটকে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সিদ্ধান্তকে ভিত্তিহীন, অবৈধ ও মুক্ত প্রতিযোগিতার নীতির পরিপন্থী বলে মনে করে।
এদিকে ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে এ নিষেধাজ্ঞার প্রশংসা করে বলেন, ‘তেল সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত করার এ পদক্ষেপ রাশিয়ার যুদ্ধযন্ত্রের আর্থিক ভিত্তির ওপর বড় আঘাত হানবে।’