এশীয় মিত্রদের নিয়ে চীনের প্রতি হুঁশিয়ারি মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রীর
যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রথম দিনেই জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার সঙ্গে এক হয়ে এশিয়া মহাদেশে চীনের জবরদস্তিমূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন মার্কো রুবিও। সাগরে চীনের সাম্প্রতিক কর্মকাণ্ডের প্রতি এটিকে যুক্তরাষ্ট্রের পরিষ্কার হুঁশিয়ারি বলেই মনে করা হচ্ছে। খবর এএফপির।
আগে থেকেই চীনের উত্থানের বিরুদ্ধে পাল্টা ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেওয়া ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের একদিন পর গতকাল মঙ্গলবার (২১ জানুয়ারি) মার্কো রুবিও কোয়াড জোটভুক্ত দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন।
এই জমায়েত যুক্তরাষ্ট্রের মিত্র ও সহযোগী দেশগুলোর প্রতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘন ঘন অবস্থান পরিবর্তনের বিপরীত অবস্থানকেই প্রকাশ করে। ইতোমধ্যে ট্রাম্প ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিরুদ্ধে বাণিজ্যে শুল্কারোপের হুমকি দিয়েছেন।
মার্কো রুবিও এবং এশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এক যৌথ বিবৃতিতে ‘খোলা ও মুক্ত ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয়’ অঞ্চল গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এটিকে চীনের আগ্রাসী মনোভাবের বিরুদ্ধে একটি বার্তা হিসেবেই দেখা হচ্ছে। কেননা, এই পথেই হাঁটছে মার্কিন প্রশাসন ও দেশটির প্রধান রাজনৈতিক দলগুলো। জাপান, ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা বলেন, তারা এমন একটি অঞ্চলের প্রতি তাদের সমর্থন প্রকাশ করেন, যেখানে আইনের শাসন, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, সার্বভৌমত্ব ও আঞ্চলিক অখণ্ডতাকে গুরুত্ব দেওয়া হবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, শক্তি প্রয়োগ ও জবরদস্তিমূলক তৎপরতার মাধ্যমে অবস্থার পরিবর্তনের বিরুদ্ধে রয়েছে এই জোট।
দেশগুলোর পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা এ বছর ভারতে আগে থেকে নির্ধারিত কোয়াড সম্মেলনে অংশ নেওয়ার বিষয়টিও নিশ্চিত করেছেন। ডোনাল্ড ট্রাম্প তার প্রথম মেয়াদে হিন্দু জাতীয়তাবাদী ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলেছিলেন।
যুক্তরাষ্ট্রের মিত্রদেশ ফিলিপাইনের সঙ্গে চীনের উত্তেজনার প্রসঙ্গটি সাম্প্রতিক সময়ে বেশ আলোচিত। ভূখণ্ডের মালিকানা নিয়ে দেশ দুটির মধ্যে এই উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া মার্কো রুবিও তাইওয়ানকে চীনের আগ্রাসন থেকে রক্ষা করারও নিশ্চয়তা দিয়েছেন।
ডোনাল্ড ট্রাম্প তার নির্বাচনি প্রচারণায় বলেছিলেন, তাইওয়ানকে রক্ষার জন্য যুক্তরাষ্ট্রকে অর্থ প্রদান করা উচিত। তার এ ধরনের মন্তব্য তাইওয়ানকে বেশ ক্ষুব্ধও করেছিল।
কোয়াড জোটের স্বপ্নদ্রষ্টা ছিলেন প্রয়াত জাপানি প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে। যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের মাধ্যমে একে পূর্ণ মাত্রা দেন। তবে কোয়াডের বিরোধিতা করে আসছে চীন। তারা অভিযোগ করছে, এর মাধ্যমে এশিয়ার উঠতি শক্তিগুলোকে ঘিরে ফেলা হচ্ছে।