আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বাতিল করল শ্রীলঙ্কা
ভারতের বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বাতিল করেছে শ্রীলঙ্কা। আজ শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) বার্তাসংস্থা এএফপির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানা গেছে।
শ্রীলঙ্কার জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের সূত্র উল্লেখ করে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছরের শেষের দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আদানি গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা গৌতম আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ওঠে। এরপরই শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিশানায়েকের প্রশাসন কোম্পানিটির বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে। তদন্তে দুর্নীতির অভিযোগের পর ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানি গ্রুপের সাথে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বাতিল করেছে শ্রীলঙ্কা।
এএফপির প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট দিশানায়েকের প্রশাসন ক্ষমতায় বসার আগে ২০২৪ সালের মে মাসে দ্বীপরাষ্ট্রটির উত্তর-পশ্চিমে নির্মিত আদানির একটি বায়ু বিদ্যুৎ কমপ্লেক্স থেকে শূন্য দশমিক শূন্য আট দুই ছয় (০.০৮২৬) মার্কিন ডলারে প্রতি কিলোওয়াট বিদ্যুৎ ক্রয় করার চুক্তি করেছিল। তবে দেশটির জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের এক শীর্ষ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে এএফপিকে জানিয়েছেন, দিশানায়েকের মন্ত্রিসভা এই মাসে চুক্তিটি কার্যকর না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
ওই কর্মকর্তা আরও জানান, সরকার বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি বাতিল করেছে, তবে প্রকল্পটি বাতিল করা হয়নি। পুরো প্রকল্পটি পর্যালোচনা করার জন্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
আদানি গ্রুপ এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, শ্রীলঙ্কার মন্ত্রিসভা ২০২৪ সালের মে মাসে অনুমোদিত শুল্ক হ্রাস করার বিষয়টি পুনর্মূল্যায়ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। নতুন সরকারের অগ্রাধিকার ও জ্বালানি নীতির আলোকে এখন পুনরায় চুক্তির মূল্যায়ন করা হবে।
এদিকে শুক্রবার (২৪ জানুয়ারি) মুম্বাইয়ে লেনদেনের সময় আদানির প্রধান তালিকাভুক্ত ইউনিটের (আদানির এন্টারপ্রাইজ) শেয়ার প্রায় তিন শতাংশ কমে যেতে দেখা গেছে।
নিউইয়র্কের প্রসিকিউটররা জানান, ২০২৪ সালের ১৯ নভেম্বর যুক্তরাষ্ট্রে ভারতীয় শিল্পপতি আদানির বিরুদ্ধে ঘুষ প্রদান এবং মার্কিন বিনিয়োগকারীদের কাছে লেনদেন গোপন করার অভিযোগ ওঠে। তবে আদানি গ্রুপ অভিযোগগুলিকে ‘ভিত্তিহীন’ বলে উড়িয়ে দেয়।
২০২২ সালে আর্থিক বিপর্যয়ের পর শ্রীলঙ্কায় প্রবেশকারী প্রথম বিদেশি বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান ছিল আদানি।
শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট অনুরা কুমার দিশানায়েকে গত বছরের সেপ্টেম্বরে ক্ষমতায় আসেন। এরপর থেকেই তিনি দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর হন এবং বিদেশে পাচার হওয়া শ্রীলঙ্কার অর্থ ফিরিয়ে আনার প্রতিশ্রুতি দেন।