প্যারিস এআই সম্মেলনে প্রযুক্তি ও রাজনৈতিক নেতাদের সামনে যত চ্যালেঞ্জ
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2025/02/11/eaai_smmeln_1.jpg)
বিশ্ব ও প্রযুক্তি খাতের নেতারা প্যারিসে একটি উচ্চপর্যায়ের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) সম্মেলনে একত্রিত হয়েছেন। সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) শুরু হওয়া দুই দিনব্যাপী এই সম্মেলনে ব্যবসা ও সমাজে এআইয়ের প্রভাব এবং এর ভবিষ্যৎ নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা চলছে। খবর এএফপির।
ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সহ-আয়োজনে এই সম্মেলনের উদ্দেশ্য হলো বিকাশমান এআই খাতের জন্য একটি প্রশাসন কাঠামো নির্ধারণ করা।
ফ্রান্সের রাজধানীর ঐতিহ্যবাহী গ্র্যান্ড প্যালেসে আয়োজিত এই সম্মেলনে যুক্তরাষ্ট্রের ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স, চীনের উপপ্রধানমন্ত্রী ঝাং গোছিং, ওপেনএআইয়ের প্রধান স্যাম অল্টম্যান ও গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দার পিচাইসহ প্রায় দেড় হাজার অতিথি অংশগ্রহণ করেছেন।
এআইয়ের টেকসই উন্নয়ন
এআই প্রযুক্তি ব্যাপক সম্ভাবনা সৃষ্টি করলেও এটি উচ্চমাত্রার শক্তি ও সম্পদ ব্যবহার করে। ম্যাক্রোঁর এআই দূত অ্যান বুভেরো উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, ‘এআইয়ের বর্তমান প্রবণতা টেকসই নয়, তবে এটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় সহায়ক হতে পারে।’
ফ্রান্সের এআই বিনিয়োগ
রোববার এক টেলিভিশন সাক্ষাৎকারে ম্যাক্রোঁ এআই গবেষণা ও অবকাঠামোতে ১০৯ বিলিয়ন ইউরো বিনিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ‘স্টারগেট’ প্রকল্পের সমতুল্য বলে উল্লেখ করেন তিনি।
বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতা
সম্প্রতি চীনের স্টার্ট-আপ ‘ডিপসিক’ কম খরচে উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন এআই মডেল তৈরি করে সিলিকন ভ্যালিকে চমকে দিয়েছে। অন্যদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ‘স্টারগেট’ প্রকল্পের আওতায় বিশাল ডেটা সেন্টার নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
ইউরোপের অবস্থান
বস্টন কনসাল্টিং গ্রুপের সিলভান ডুরানটন বলেন, ‘ইউরোপকে অবশ্যই এআই প্রতিযোগিতায় নিজেদের অবস্থান সুসংহত করতে হবে।’ ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভন ডের লায়েন এই সম্মেলনে গবেষক ও স্টার্টআপদের জন্য ১০টি সুপারকম্পিউটার নির্মাণের পরিকল্পনা ঘোষণা করতে পারেন।
‘কারেন্ট এআই’ উদ্যোগ
সম্মেলনের আগের দিন কিছু দেশ, প্রতিষ্ঠান ও দাতব্য সংস্থা মিলে ৪০০ মিলিয়ন ডলারের ‘কারেন্ট এআই’ প্রকল্প চালুর ঘোষণা দিয়েছে, যা এআই গবেষকদের ডাটা অ্যাক্সেস প্রদান, ওপেন-সোর্স টুল সরবরাহ এবং এআইয়ের সামাজিক ও পরিবেশগত প্রভাব পরিমাপে কাজ করবে।
‘অনিয়ন্ত্রিত প্রযুক্তির ক্ষতি আমরা দেখেছি, কিন্তু জনস্বার্থে এটি ব্যবহারের বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে’, বলেন কারেন্ট এআইয়ের প্রতিষ্ঠাতা মার্টিন তিসনে।
মঙ্গলবার সম্মেলনের শেষ দিনে বিশ্বের ১০০টি দেশের রাজনৈতিক নেতারা একটি পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে অংশ নেবেন, যেখানে এআইয়ের টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশবান্ধব ব্যবহারের জন্য ঐকমত্যে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হবে।
তবে যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, চীন ও ভারতের মতো দেশগুলোর ভিন্ন ভিন্ন নীতির কারণে একটি সর্বসম্মত চুক্তিতে পৌঁছানো কঠিন হতে পারে।