‘স্বৈরাচার’ অভিহিত করে জেলেনস্কির ওপর চড়াও ট্রাম্প

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ‘স্বৈরাচার’ হিসেবে অভিহিত করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। স্থানীয় সময় গতকাল বুধবার (১৯ ফেব্রুয়ারি) হুঁশিয়ারি দিয়ে ট্রাম্প বলেন, জেলেনস্কি দ্রুত শান্তি প্রতিষ্ঠা না করলে দেশ হারাতে পারেন। ট্রাম্পের এই মন্তব্য ইউরোপীয় নেতাদের মধ্যে উদ্বেগ তৈরি করেছে। খবর রয়টার্সের।
ট্রাম্পের এই আক্রমণ এমন এক সময়ে এলো যখন তিনি দাবি করেছিলেন যে ইউক্রেনই ২০২২ সালের রাশিয়ার আগ্রাসনের জন্য দায়ী। এতে উদ্বেগ আরও বেড়েছে যে ট্রাম্পের দৃষ্টিভঙ্গি মস্কোর স্বার্থকে এগিয়ে দিতে পারে।
ট্রাম্প তার সোশ্যাল মিডিয়ার এক পোস্টে বলেন, ‘নির্বাচনবিহীন স্বৈরাচার জেলেনস্কি দ্রুত না সরলে তার আর কোনো দেশ থাকবে না।’
এর প্রতিক্রিয়ায় ইউক্রেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আন্দ্রি সিবিহা জানান, ইউক্রেন আত্মসমর্পণ করবে না। তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের অস্তিত্ব রক্ষার লড়াই চালিয়ে যাব।’
জেলেনস্কির পাঁচ বছরের প্রেসিডেন্ট মেয়াদ ২০২৪ সালে শেষ হওয়ার কথা ছিল, তবে ইউক্রেনে ২০২২ সালে রাশিয়ার আক্রমণের পর জারি করা সামরিক আইন অনুযায়ী নির্বাচন স্থগিত করা হয়েছে।
জেলেনস্কির একদিন আগের দেওয়া বক্তব্যের পর ট্রাম্পের এই মন্তব্য এলো, যেখানে জেলেনস্কি বলেছিলেন, ট্রাম্প রুশ প্রচারণার শিকার হয়েছেন।
এদিকে, মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স বলেছেন, জেলেনস্কির উচিত ট্রাম্পের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে সমালোচনা না করা। ভ্যান্স বলেন, ‘ট্রাম্পকে মিডিয়ায় খারাপভাবে উপস্থাপন করে তার মন পরিবর্তন করা যাবে না।’
কংগ্রেসের কিছু রিপাবলিকান নেতা ট্রাম্পের ‘স্বৈরাচার’ মন্তব্যের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করলেও সরাসরি তাকে সমালোচনা করতে চাননি। সিনেট মেজরিটি লিডার জন থুন বলেন, ‘ট্রাম্পকে শান্তি আলোচনার জন্য সময় দেওয়া উচিত।’

জার্মান চ্যান্সেলর ওলাফ শলৎস ট্রাম্পের বক্তব্যকে ‘ভুল ও বিপজ্জনক’ বলে মন্তব্য করেছেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ইউরোপীয় নেতাদের জরুরি বৈঠকের আহ্বান জানিয়েছেন। ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কেয়ার স্টারমার ও ম্যাক্রোঁ আগামী সপ্তাহে ওয়াশিংটনে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
ট্রাম্প বলেছেন, তিনি এই মাসে পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করতে পারেন। পুতিনও বলেছেন, তারা আলোচনার জন্য প্রস্তুত তবে ওয়াশিংটন-মস্কোর মধ্যে বিশ্বাস বাড়াতে হবে।
এদিকে, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় নেতারা আশঙ্কা করছেন যে রাশিয়া ও আমেরিকা নিজেদের স্বার্থে এমন কোনো চুক্তিতে পৌঁছাতে পারে, যা ইউক্রেনের নিরাপত্তাকে উপেক্ষা করবে।
এ বিষয়ে জেলেনস্কি বলেন, ‘আমরা ইউরোপের ঐক্য ও আমেরিকার বাস্তববাদিতার ওপর নির্ভর করছি।’