পাকিস্তানে ট্রেনে হামলা : অভিযানে ৮০ জিম্মি উদ্ধার, ১৩ সন্ত্রাসী নিহত

পাকিস্তানের বেলুচিস্তানের বোলান জেলায় কোয়েটা থেকে পেশোয়ারগামী যাত্রীবাহী ট্রেন জাফর এক্সপ্রেসে সন্ত্রাসী হামলার পর জিম্মি যাত্রীদের উদ্ধারে নিরাপত্তা বাহিনী অভিযান চালাচ্ছে।
রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমের বরাত দিয়ে আজ বুধবার (১২ মার্চ) এ তথ্য জানিয়েছে দেশটির সংবাদমাধ্যম ডন।
রেডিও পাকিস্তান ও পিটিভি নিউজের বরাত দিয়ে জানানো হয়, ধাদর এলাকায় সন্ত্রাসীরা ট্রেনটিতে হামলা চালিয়ে যাত্রীদের জিম্মি করে এবং তারা ‘বিদেশি সহায়তাকারীদের’ সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল। নিরাপত্তা বাহিনী চারপাশ ঘিরে ফেলেছে এবং যাত্রীদের উদ্ধারে অভিযান চালাচ্ছে।
পরবর্তী আপডেটে রেডিও পাকিস্তান জানায়, ৮০ জন জিম্মিকে নিরাপদে উদ্ধার করা হয়েছে, যার মধ্যে ৪৩ জন পুরুষ, ২৬ জন নারী এবং ১১ জন শিশু রয়েছে।
রাতের শেষ আপডেটে জানানো হয়, নিরাপত্তা বাহিনীর অভিযানে ১৩ জন সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে এবং আরও অনেকে আহত হয়েছে।

নিষিদ্ধ ঘোষিত বেলুচিস্তান লিবারেশন আর্মি (বিএলএ) এ হামলার দায় স্বীকার করেছে।
দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী তালাল চৌধুরী জানান, দুপুরের দিকে ট্রেনটি আটকে দেওয়া হয়। নিরাপত্তা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কিছু যাত্রীকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও জানান, কিছু যাত্রীকে পাহাড়ি এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে এবং সন্ত্রাসীরা নারী ও শিশুদের ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।
বেলুচিস্তান সরকারের মুখপাত্র শাহিদ রিন্দ জানান, পেহরো কুনরি ও গাদালার মধ্যে ট্রেনটিতে তীব্র গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে।
রেলওয়ের কন্ট্রোলার মুহাম্মদ কাশিফ জানান, ট্রেনে ৯টি কোচ এবং প্রায় ৫০০ জন যাত্রী ছিল।

রয়টার্স জানায়, হামলার স্থলে একটি বিস্ফোরণের শব্দ শোনা গেছে এবং নিরাপত্তা বাহিনী ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে গুলিবিনিময় চলছে।
সরকার সিবি হাসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে জরুরি অবস্থা জারি করেছে এবং চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রস্তুত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
প্রেসিডেন্ট আসিফ আলী জারদারি এ হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর দ্রুত অভিযানের প্রশংসা করেন।
প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরীফ বলেন, ‘সন্ত্রাসীদের কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। আমরা পাকিস্তান থেকে সন্ত্রাস নির্মূল করব।’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মোহসিন নকভি বলেন, ‘নিরীহ যাত্রীদের ওপর হামলাকারীরা কোনো দয়ার যোগ্য নয়।’
২০২৪ সালে বেলুচিস্তানে সন্ত্রাসী হামলা ১১৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং প্রদেশটিতে ১৭১টি হামলার ঘটনা ঘটেছে বলে জানায় ইসলামাবাদভিত্তিক থিংক ট্যাংক পিপস।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বেলুচিস্তান ও খাইবার পাখতুনখোয়ায় সন্ত্রাসী হামলা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে, যা দেশের নিরাপত্তার জন্য উদ্বেগজনক।