গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত ৩৬

অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলি হামলায় ৩৬ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে আহত হয়েছেন আরও অনেকে। শনিবার (২৬ এপ্রিল) দিনভর এসব হতাহতের ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছে গাজার সিভিল ডিফেন্স।
সংস্থাটির মুখপাত্র মাহমুদ বাসাল বার্তা সংস্থা সিনহুয়াকে বলেন, ইসরায়েলি বাহিনী গাজার বিভিন্ন এলাকায় বেশকিছু বেসামরিক আবাসিক বাড়ি, জনসমাগমের স্থান ও তাবুকে লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে।
বাসাল বলেন, ইসরায়েলি এসব হামলায় গাজা শহরের পশ্চিম ও দক্ষিণে দুটি বাড়িতে হামলায় ১৩ জন নিহত হয়েছেন। এছাড়া ইসরায়েলি ড্রোন হামলায় উত্তর গাজার বেইত হানুনে তিনজন নিহত হয়েছেন। মধ্য গাজার আল-জাওয়াইদা শহরের একটি বাড়িতে হামলায় দুজন নিহত হয়েছেন।
গাজার দেইল আল বালাহ শহরের একটি ক্যাফেতে হামলায় চারজন, মাগাজি শরণার্থী শিবিরের উত্তরে ফিলিস্তিনি জনসমাগমস্থলে ইসরায়েলি হামলায় আরও পাঁচজন নিহত হয়েছেন।
মধ্য গাজার আল জাওয়াইদা, খান ইউনিসের আল মাওয়াশিতে ইসরায়েলি গোলাবর্ষণে আরও সাতজন নিহত হয়েছেন বলে জানান সিভিল ডিফেন্সের মুখপাত্র বাসাল।
ইসরায়েল যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে চলতি বছরের ১৮ মার্চ থেকে গাজা উপত্যকায় ভয়াবহ হামলা শুরু করে। এতে অন্তত ২ হাজার ১১১ জন ফিলিস্তিনি নিহত হন। আহত হন আরও ৫ হাজার ৪৮৩ জন।
হামাস নিয়ন্ত্রিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের শনিবারের দেওয়া তথ্যমতে, ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি আগ্রাসনে গাজায় ৫১ হাজার ৪৯৫ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। আর সর্বমোট আহত হয়েছেন ১ লাখ ১৭ হাজার ৫২৪ জন।
ইসরায়েলি বাহিনী এখনো গাজায় সামরিক অভিযান অব্যাহত রেখেছে। গাজার বিভিন্ন এলাকায় হামাস যোদ্ধাদের সঙ্গে সংঘর্ষ হচ্ছে দখলদার ইসরায়েলি বাহিনীর।
হামাসের সামরিক শাখা আল কাসসাম ব্রিগেড এক বিবৃতিতে বলেছে, শনিবার পূর্ব গাজার শুজাইয়া পাড়ায় একটি বাড়িতে অবস্থানকারী ইসরায়েলি সেনাদের লক্ষ্য করে হামলা চালিয়েছে যোদ্ধারা। এতে বেশ কয়েকজন সৈন্য হতাহত হয়েছেন।
গত শুক্রবার দুই ইসরায়েলি সেনা নিহত হয়েছেন বলে শনিবার সন্ধ্যায় পৃথক বিবৃতিতে জানিয়েছে ইসরায়েলি ডিফেন্স ফোর্স (আইডিএফ) ও ইসরায়েল পুলিশ। ইসরায়েলি নিহতরা হলো সাঁজোয়া যানের কর্পস অফিসার ও প্লাটুন কমান্ডার ইডো ভোলোচ (২১) ও সীমান্ত পুলিশের আন্ডারকভার অফিসার ইতজাক কাহানা (১৯)।
এদিকে চলমান যুদ্ধের মধ্যে হামাস শনিবার একটি যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব দিয়েছে। এতে বলা হয়েছে, পাঁচ বছরের যুদ্ধবিরতির শর্তে সমস্ত ইসরায়েলি জিম্মিদের একসঙ্গে মুক্তি দিতে প্রস্তুত হামাস।
জাতিসংঘের বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি সতর্ক করে বলেছে, গাজায় তাদের খাদ্য মজুদ সম্পূর্ণরূপে শেষ হয়ে গেছে। তারা তাদের মজুদের সর্বশেষ খাদ্যটুকু স্থানীয়দের মাঝে বিতরণ করেছেন।
এমতাবস্থায় গাজায় সীমান্ত ক্রসিং খুলে দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে ১২টি প্রধান সাহায্যকারী সংস্থা।