যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও ইসরায়েলি জাহাজে হামলা চালাবে হুথিরা

ইয়েমেনের ইরান-সমর্থনপুষ্ট হুথি বিদ্রোহীরা মার্কিন হামলার অবসান ঘটিয়ে যুদ্ধবিরতি সত্ত্বেও লোহিত সাগরে ইসরাইলি জাহাজকে লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করা অব্যাহত রাখবে। হুথিরা তাদের উপকূলের কাছ দিয়ে চলা গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য পথে হামলা বন্ধে রাজি হওয়ার একদিন পরই এ ঘোষণা দিয়েছে তারা। হুথি রাজনৈতিক ব্যুরোর সদস্য আবদুল মালিক আলেযরি এএফপিকে জানান, ইসরাইল এই চুক্তির অন্তর্ভুক্ত নয়। খবর এএফপির।
আবদুল মালিক বলেন, ‘এই চুক্তি কেবল মার্কিন ও অন্যান্য জাহাজের জন্য প্রযোজ্য, ইসরাইলের জন্য নয়। কাজেই ইসরাইলি জাহাজগুলো বাদে আন্তর্জাতিক সব জাহাজের জন্য এই জলপথ নিরাপদে চলাচল করতে পারবে।’
হুথিরা এক দশকের বেশি সময় ধরে ইয়েমেনের বড় অংশ নিয়ন্ত্রণ করে আসছে, ২০২৩ সালের নভেম্বরে ইসরাইল-হামাস যুদ্ধ শুরুর কয়েক সপ্তাহ পর থেকে লোহিত সাগর ও গালফ অব এডেনে ইসরাইল সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোতে হামলা শুরু করে।
২০২৪ সালের জানুয়ারিতে যুক্তরাষ্ট্র ও ব্রিটেন সামরিক হামলা চালানোর পর হুথিরা তাদের হামলার পরিসর বাড়িয়ে এসব দেশের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট জাহাজগুলোকেও লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করে।
বুধবার (৭ মে) হুথি মুখপাত্র ইয়াহিয়া সারি জানান, তাদের বাহিনী দুটি হামলা চালিয়েছে—দক্ষিণ ইসরাইলের রামন বিমানবন্দরে দুটি ড্রোন এবং তেলআবিব অঞ্চলে ‘শত্রুদের একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে’ একটি ইয়াফা ড্রোন ব্যবহার করে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র এসমাইল বাকায়ি আগেই ‘দেশটির বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রাসন বন্ধ হওয়াকে’ স্বাগত জানান এবং ইয়েমেনিদের ‘ঐতিহাসিক প্রতিরোধের’ প্রশংসা করেন।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আগামী সপ্তাহে উপসাগরীয় দেশগুলো সফর করবেন, এই চুক্তিকে তার সাফল্য হিসেবে তুলে ধরে বলেন, ‘হুথিরা আত্মসমর্পণ করেছে। তারা বলেছে, তারা আর জাহাজ উড়িয়ে দেবে না, এটাই ছিল আমাদের উদ্দেশ্য।’
এই যুদ্ধবিরতির আগে কয়েক সপ্তাহ ধরে যুক্তরাষ্ট্র হুথিদের হামলা ঠেকাতে ধারাবাহিক বিমান হামলা চালায়। হুথিদের তথ্য অনুসারে, এই হামলায় ৩০০ জন নিহত হয়েছে বলে এএফপি জানিয়েছে।
হুথিদের বহু ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলার কারণে লোহিত সাগরপথে কার্গো চলাচল ব্যাপকভাবে হ্রাস পেয়েছে, যে পথটি বিশ্ব নৌ-বাণিজ্যের প্রায় ১২ শতাংশ পরিবহণ করে।
হুথিরা বলছে, তাদের এই অভিযান ইসরাইলি ভূখণ্ডে ধারাবাহিক হামলা এবং ফিলিস্তিনিদের প্রতি সংহতির অংশ।