ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাত নিরসনে দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান ‘অপরিহার্য’ : জাতিসংঘ মহাসচিব

ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের সমাধানে দ্বি-রাষ্ট্র নীতিকে ‘অপরিহার্য’ বলে উল্লেখ করেছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস। এর বিকল্প কোনো পথকে ‘অগ্রহণযোগ্য’ হিসেবে অভিহিত করেন তিনি। স্থানীয় সময় বুধবার (৪ জুন) নিউ ইয়র্কে জাতিসংষের সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন জাতিসংঘের মহাসচিব।
অ্যান্তোনিও গুতেরেস বলেন, ‘দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের স্বপ্ন এখন বিলুপ্তির দ্বারপ্রান্তে। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের দায়িত্ব হলো এই চক্রাকার দখল ও সহিংসতা বন্ধ করা এবং শান্তির জন্য একটি টেকসই পথ তৈরি করা।’
অনেক বিশ্লেষক মনে করেন, অধিকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে ইসরায়েলের অবৈধ বসতি স্থাপন অব্যাহত থাকার কারণে একটি ভবিষ্যত ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের সম্ভাবনা প্রায় অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে। এটি উল্লেখ করে গুতেরেস প্রশ্ন তোলেন, এর বিকল্প কী হতে পারে!
তিনি জাতিসংঘের মহাসচিব বলেন, এটি কি সেই এক-রাষ্ট্র সমাধান যেখানে হয় ফিলিস্তিনিদের বিতাড়িত করা হবে অথবা ফিলিস্তিনিদের তাদের ভূমিতে অধিকারহীনভাবে বসবাস করতে বাধ্য করা হবে? এটি সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য হবে।

গুতেরেস দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করেন, দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানকে টিকিয়ে রাখার জন্য এবং এটিকে বাস্তবায়িত করার শর্তগুলি পূরণের জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সবকিছু করা কর্তব্য।
জাতিসংঘের মহাসচিব আরও বলেন, ‘আমার আহ্বান স্পষ্ট ; সদস্য রাষ্ট্রগুলোকে এখনই দ্বি-রাষ্ট্র সমাধান বাস্তবায়নের জন্য অপরিবর্তনীয় পদক্ষেপ নিতে হবে। উভয় পক্ষের চরমপন্থীদের শান্তি প্রক্রিয়া ধ্বংস করতে দেওয়া যাবে না।’
গুতেরেস জোর দিয়ে বলেন, ‘এই অঞ্চলে টেকসই শান্তি কেবল তখনই সম্ভব, যখন ইসরায়েল ও ফিলিস্তিন শান্তিপূর্ণভাবে, নিরাপদ ও স্বীকৃত সীমান্তের মধ্যে, পারস্পরিক স্বীকৃতি ও অধিকার নিয়ে সহাবস্থান করবে।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আরও বলেন, আমরা অতীতে দেখেছি, যুদ্ধবিরতির মাধ্যমে গাজায় মানবিক সহায়তা পৌঁছানো সম্ভব হয়েছে। এখন আমাদের একটি স্থায়ী যুদ্ধবিরতি নিশ্চিত করতে হবে, যাতে মানবিক সহায়তা অব্যাহতভাবে পৌঁছানো যায়।
এই প্রেক্ষাপটে আগামী ১৭ থেকে ২০ জুন নিউ ইয়র্কে একটি আন্তর্জাতিক শান্তি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে, যেখানে ফ্রান্স ও সৌদি আরব সহআয়োজক হিসেবে থাকছে। এই সম্মেলনে গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠী হামাসকে নিরস্ত্রীকরণ, জিম্মিদের মুক্তি, ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের সংস্কার ও দ্বি-রাষ্ট্র সমাধানের বাস্তবায়ন নিয়ে আলোচনা হবে।
এদিকে আজ গাজাজুড়ে ইসরায়েলের বিভিন্ন হামলায় অন্তত ৫২ জন নিহত হয়েছে বলে জানা গেছে।
গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, গাজায় ইসরায়েলের চলমান আগ্রাসনে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ৫৪ হাজার ৬০৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৪১ জন আহত হয়েছেন। অন্যদিকে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলায় ইসরায়েলে আনুমানিক ১ হাজার ১৩৯ জন নিহত হয়েছে।