অপারেশন সিঁদুরে নিহত বিমান ছিনতাইয়ের হোতা রউফ আজহার, দাবি বিজেপির

১৯৯৯ সালে ইন্ডিয়ান এয়ারলাইন্সের আইসি-৮১৪ উড়োজাহাজ যাত্রীসহ অপহরণের ঘটনার মূল হোতা আব্দুল রউফ আজহার সম্প্রতি ভারতের চালানো ‘অপারেশন সিঁদুরে’ নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে ভারতীয় জনতা পার্টি (বিজেপি)। রউফ জঙ্গি গোষ্ঠী জইশ-ই-মোহাম্মদের প্রধান মাসুদ আজহারের ছোট ভাই। খবর এনডিটিভির।
বিজেপি তাদের সামাজিক মাধ্যম প্ল্যাটফর্মে আব্দুল রউফ আজাহারের একটি ছবি পোস্ট করে তার ওপর ‘খতম’ (এলিমিনেটেড) শব্দটি লিখেছে।
এর আগে মঙ্গলবার পরিচালিত ‘অপারেশন সিঁদুরে’ ভারত পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ড ও পাকিস্তান-শাসিত কাশ্মীরে (পিওকে) একাধিক জঙ্গি ঘাঁটিতে হামলা চালায়। এই অভিযানে ভারত মোট ৯টি জঙ্গি শিবির গুঁড়িয়ে দিয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে পাকিস্তানের মূল ভূখণ্ড বাহাওয়ালপুরে জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান ঘাঁটি এবং মুরিদকেতে লস্কর-ই-তৈয়বার প্রধান ঘাঁটি।
বিজেপি সূত্রে খবর, নিহত জঙ্গিদের মধ্যে উড়োজাহাজ অপহরণের সেই মূল হোতা আব্দুল রউফ আজহারও রয়েছে।
গত ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে জঙ্গি হামলায় ২৬ জন পর্যটকের মৃত্যুর বদলা হিসেবে ভারত এই হামলা চালায়। এর আগে জইশের মূল ঘাঁটিতে হামলায় জৈশ-ই প্রধান মাসুদের পরিবারের ১০ জন সদস্য নিহত হয়। এবার তার ছোট ভাই রউফের মৃত্যুর খবর সামনে এলো।
প্রায় ২৬ বছর আগে সেই ভয়াবহ উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটে। আব্দুল রউফ আজহার ওই ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী হিসেবে ভারতের মোস্ট ওয়ান্টেড সন্ত্রাসীদের তালিকায় ছিলেন।

১৯৯৯ সালের ২৪ ডিসেম্বর আব্দুল রউফ আজহারসহ পাঁচ জঙ্গি ভারতীয় এয়ারলাইন্সের আইসি-৮১৪ বিমান অপহরণ করে এবং ভেতরে থাকা ১৭৯ জন যাত্রী ও ১১ জন বিমানকর্মীকে পণবন্দি করে মাসুদ আজহার আলভীসহ তিন জঙ্গিনেতার মুক্তি দাবি করে। বিমানটিকে অমৃতসর, লাহোর ও দুবাই হয়ে অবশেষে আফগানিস্তানের কান্দাহারে নিয়ে যাওয়া হয়। জঙ্গিরা একজন যাত্রীকে হত্যাও করেছিল। দীর্ঘ টানাপোড়েনের পর বাকি যাত্রীদের জীবনের বিনিময়ে ভারত সরকার মাসুদ আজহারসহ তিন জঙ্গিনেতাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয়।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালে ভারতের পার্লামেন্টে হামলা, ২০০৮ সালের মুম্বাইয়ের সন্ত্রাসী হামলা, ২০১৬ সালের পাঠানকোট হামলা ও ২০১৯ সালের পুলওয়ামা হামলার নেপথ্যে মাসুদ আজহারের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ। ১৯৯৪ সালে মাসুদকে ভারত গ্রেপ্তার করলেও ১৯৯৯ সালের কান্দাহার বিমান অপহরণের ঘটনার পর তাকে মুক্তি দিতে বাধ্য হয় ভারত।