শুল্ক ১১৫ শতাংশ কমাবে যুক্তরাষ্ট্র ও চীন

যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে চলতে থাকা বাণিজ্য যুদ্ধে উত্তেজনার পারদ কমতে শুরু করেছে। মার্কিন ট্রেজারি সেক্রেটারি স্কট ব্যাসেন্ট বলেছেন, এই দুটি দেশ এখন থেকে পরস্পরের পণ্যে ১১৫ শতাংশ শুল্ক ছাড়ের ঘোষণা দিয়েছে।
এর অর্থ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রে চীন থেকে আমদানি করা পণ্যে শুল্ক দিতে হবে ৩০ শতাংশ অন্যদিকে যুক্তরাষ্ট্র থেকে আমদানি করা পণ্যে চীনের শুল্ক দাঁড়াবে ১০ শতাংশে। তবে ১৪ মে থেকে শুরু হয়ে শুল্ক ছাড়ের এই প্রবণতা কার্যকর থাকবে সামনের ৯০ দিনের জন্য।
সুইজারল্যান্ডের জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য আলোচনা শেষে দুপক্ষ এই চুক্তিতে পৌঁছাতে পেরেছে বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসি।
এদিকে, এএফপির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোমবার (১২ মে) জেনেভায় যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের কর্মকর্তাদের মধ্যে আলোচনায় ‘উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির’ পর বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে। একে অন্যের ওপর বাড়তি শুল্কারোপের যে প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল এবং যার কারণে গোটা বিশ্বেরর বাণিজ্যে প্রভাব পড়তে শুরু করেছিল, সেই অচলাবস্থা থেকে কিছুটা হলেও আশার সঞ্চার করছে দুদেশের এই সাময়িক চুক্তি।
গত ২ এপ্রিল যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার দেশের বাণিজ্যিক অংশীদারদের ওপর পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের সিদ্ধান্তের কথা জানান। সেই সিদ্ধান্তের সবচেয়ে বড় প্রভাবটি পড়ে চীনের ওপর। শুধু চীনই নয় বিশ্বের অর্থনৈতিকভাবে শক্তিধর দেশগুলোও এই পাল্টাপাল্টি শুল্কারোপের কারণে একধরনের বাণিজ্য যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চীনা পণ্যের ওপর ১৪৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত জানালে চীনও পাল্টা ব্যবস্থা হিসেবে মার্কিন পণ্যে ১২৫ শতাংশ শুল্কারোপের সিদ্ধান্ত নেয়। শুরু হয় বিশ্বের শীর্ষ দুই বাণিজ্য শক্তির মধ্যে বাণিজ্যযুদ্ধ।
এদিকে, জেনেভায় দুই দিন আলোচনার পর উত্তেজনা কমার লক্ষণ দেখা গিয়েছিল আগে থেকেই। যার রেশ ধরে আজ সোমবার দুপক্ষ জানায়, তারা উত্তেজনা হ্রাসে শুল্ক হার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন এবং অমিমাংসীত বেশ কিছু বিষয়ে সমঝোতায় পৌঁছাতে আরও আলোচনার পথ খোলা রাখছেন।

এ বিষয়ে এক যৌথ বিবৃতিতে, যুক্তরাষ্ট্র জানায় তারা শুল্কারোপের হার ৩০ শতাংশে নামিয়ে আনবে। অন্যদকে, চীন জানায় তারা মার্কিন পণ্যে শুল্কারোপের হার ১০ শতাংশে নামিয়ে আনবে।
দুই দেশের এই সিদ্ধান্তের প্রভাব পড়তে শুরু করেছে বিশ্ব পুঁজিবাজারে। হংকং নেতৃত্বাধীন এশিয়ার পুঁজিবাজার ছিল ঊর্ধ্বমুখী, সাংহাই পুঁজিবাজারেও সূচক ছিল ইতিবাচক। টোকিও, সিডনি, সিউল, তাইপে এবং ওয়েলিংটন পুঁজিবাজারও সবুজ সংকেত দিচ্ছিল। প্যারিস ও ফ্রাঙ্কফার্টের পুঁজিবাজারেও ছিল ঊর্ধ্বমুখী অবস্থান। মার্কিন পুঁজিবাজারও স্ফিতির কথাই জানান দিচ্ছিল লেনদেনের মাধ্যমে।