হামাস নির্মূলে বড় ধরনের অভিযান শুরু ইসরায়েলের

গাজা উপত্যকা থেকে ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসকে নির্মূলে বড় ধরনের সম্মিলিত অভিযান শুরুর কথা জানিয়েছে ইসরায়েলের সামরিক বাহিনী। এদিকে, আজও ধ্বসস্তূপে পরিণত হওয়া এই ভূখণ্ডে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মমতায় ১০ জন ফিলিস্তিনি নাগরিক প্রাণ হারিয়েছে বলে জানিয়েছেন উদ্ধারকর্মীরা। খবর এএফপির।
গাজায় ইসরায়েলি বাহিনী ফিলিস্তিনিদের জন্য সবধরনের ত্রাণ সামগ্রীর সরবরাহ পথ বন্ধ করে দিয়েছে। মানবিক কোনো সাহায্যই সেখানে প্রবেশ করতে পারছে না। যুদ্ধবিধ্বস্ত এই উপকূলীয় এলাকায় কাজ চলছিল মাত্র একটি হাসপাতালে। তবে প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের অভাব ও ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় হাসপাতাল প্রাঙ্গণ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণে সেটিও যেকোনো সময় বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিতে পারে কর্তৃপক্ষ।
অন্যদিকে, ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী এক ঘোষণায় জানিয়েছে, তারা নতুন এই আক্রমণের ‘প্রাথমিক ধাপ’ শুরু করেছে। হামাসকে পরাজিত করতে এবং ইসরায়েলি পণবন্দিদের মুক্ত করতে যুদ্ধের সব লক্ষ্য অর্জনে গাজায় সম্প্রসারিত এই অভিযান চালাচ্ছে সামরিক বাহিনী। তারা আরও বলেছে, গাজা উপত্যকার ভেতরে সব এলাকার নিয়ন্ত্রণ নিতে চরম আঘাত হানতে যাচ্ছে ইসরায়েল।
এদিকে, বাগদাদে আরব লীগের সম্মেলনে দেওয়া এক বক্তব্যে জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস বলেছেন, তিনি ইসরায়েলের সম্প্রসারিত স্থল অভিযানের খবরের কারণে বেশ শঙ্কিত। তিনি আরও বলেন, এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন সেখানে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি কার্যকর করা।

পাশাপাশি স্পেনের প্রধানমন্ত্রী পেদ্রো সানচেজ এবং মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি গাজায় যুদ্ধ বন্ধে তৎপরতা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।
গাজায় আজ শনিবার সকালেও ১০ জনের মরদেহ হাসপাতালে আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে যুদ্ধবিধ্বস্ত উপত্যকাটির সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি। এদের মধ্যে তিনজন মারা গেছে খান ইউনিসে ইসরায়েলি ড্রোন হামলায়। এছাড়া, উত্তরাঞ্চলের জাবালিয়াতে একটি বাড়িতে ইসরায়েলি বাহিনীর বোমা হামলায় মারা গেছে আরও তিনজন। এছাড়া খান ইউনিসের বিভিন্ন স্থানে ইসরায়েলি বাহিনীর হামলায় মারা গেছে আরও চারজন। সিভিল ডিফেন্স এজেন্সি আরও জানিয়েছে, শুক্রবার ইসরায়েলি হামলায় গাজায় মারা গেছে কমপক্ষে ১০০ জন ফিলিস্তিনি।
গত ১৮ মার্চ দুই মাসের অস্ত্রবিরতি ভেঙে গাজায় নতুন করে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। আন্তর্জাতিক নিন্দার মুখেও এই হামলা বন্ধ করেনি ইহুদি রাষ্ট্রটি।
এদিকে, নতুন করে শুরু হওয়া ইসরায়েলি হামলাকে গতকাল শুক্রবার ‘জাতিগত নির্মূলের’ সঙ্গে তুলনা করেছেন জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক প্রধান ভলকার তুর্ক।