মাঝ আকাশে তীব্র ঝড়ের কবলে উড়োজাহাজ

ভারতের রাজধানী দিল্লি থেকে শ্রীনগরগামী ইন্ডিগো এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট মাঝ আকাশে তীব্র ঝড় এবং শিলাবৃষ্টির কবলে পড়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। গতকাল বুধবার (২১ মে) ইন্ডিগোর ফ্লাইট ৬ই২১৪২ এ দুর্ঘটনার কবলে পড়ে। এ সময় উড়োজাহাজটিতে প্রবল ঝাঁকুনির সৃষ্টি হয়। খবর এনডিটিভির।
উড়োজাহাজটিতে সে সময় ২০০-র বেশি যাত্রী ছিল। তীব্র ঝড় ও প্রবল ঝাঁকুনিতে যাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। এ সময় শিশু ও যাত্রীরা চিৎকার ও কান্নায় ভেঙে পড়েন। ঝড়ের প্রভাবে উড়োজাহাজের সামনের একটি অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছে এনডিটিভি।
ঘটনার ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে, যেখানে দেখা যায় বিমানের ভেতরে বজ্রবিদ্যুতের আলো দেখে ভেতরের যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন।
বিমানটি ২২৭ জন যাত্রী নিয়ে দিল্লি থেকে রওনা দিয়েছিল এবং সন্ধ্যা ৬টা ৩০ মিনিটে শ্রীনগরে জরুরি অবতরণ করে। মাঝ আকাশে পরিস্থিতি খারাপ হওয়ায় পাইলট শ্রীনগরের এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলকে ‘ইমার্জেন্সি’ সংকেত পাঠান।
ইন্ডিগো এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, “ফ্লাইট ৬ই২১৪২ দিল্লি থেকে শ্রীনগর যাওয়ার পথে হঠাৎ শিলাবৃষ্টির মধ্যে পড়ে। ফ্লাইট ও কেবিন ক্রু প্রটোকল অনুযায়ী সব ব্যবস্থা নেন এবং বিমানটি নিরাপদে অবতরণ করে।”
বিবৃতিতে আরও জানানো হয়, “অবতরণের পর বিমানবন্দরে যাত্রীদের যত্ন নেওয়া হয়েছে এবং তাদের আরাম ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। বিমানটিকে পর্যবেক্ষণ ও রক্ষণাবেক্ষণের পরই আবার ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হবে।”
যদিও ইন্ডিগো বিমানের ক্ষতির বিস্তারিত উল্লেখ করেনি, তবে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া এক ছবিতে দেখা যায় বিমানটির সামনের অংশ আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
এদিন দিল্লি ও এনসিআর অঞ্চলে সন্ধ্যার পর প্রবল ঝড়-বৃষ্টি হয়। ঘণ্টায় ৭৯ কিমি বেগে বাতাস বইতে থাকে, সঙ্গে ছিল শিলাবৃষ্টি ও বজ্রপাত। এর ফলে বিভিন্ন স্থানে গাছ উপড়ে পড়ে, জলাবদ্ধতা দেখা দেয় ও ব্যাপক যানজট তৈরি হয়।
ভারতের আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, ৫টা ৩০ থেকে রাত ৮টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত দিল্লির সাফদরজংয়ে ১২.২ মিমি বৃষ্টিপাত রেকর্ড হয়েছে।
আবহাওয়াবিদদের মতে, এই দুর্যোগের কারণ একটি সাইক্লোনিক সার্কুলেশন যা হরিয়ানা ও সংলগ্ন এলাকায় সক্রিয় ছিল এবং তা পূর্ব-পশ্চিম অক্ষাংশ ধরে পাঞ্জাব থেকে বাংলাদেশ পর্যন্ত বিস্তৃত। আরব সাগর ও বঙ্গোপসাগর থেকে আর্দ্রতা এই ঝড়কে শক্তি জোগায়।

এর আগে একই দিনে দিল্লিতে প্রচণ্ড গরম পড়ে। আবহাওয়া দপ্তর জানিয়েছে, দিনের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪০.৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস, যা স্বাভাবিকের চেয়ে ০.৫ ডিগ্রি বেশি। গরম ও আদ্রতার কারণে “হিট ইনডেক্স” বা অনুভূত তাপমাত্রা ৫০.২ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত পৌঁছে যায়।
এদিনের ঝড়ে দিল্লির বিমানবন্দরে ফ্লাইট অপারেশন ব্যাহত হয় এবং ইয়েলো লাইনে মেট্রো চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। নোয়ডাতেও বাতাসের দাপটে জানালা ভেঙে পড়ে ও হোর্ডিং ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
বিমান সংস্থাগুলো আগাম জানিয়ে দিয়েছে, এমন আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে ফ্লাইট সময়সূচিতে প্রভাব পড়তে পারে।