পেন্টাগনে সাংবাদিক প্রবেশে নতুন বিধিনিষেধ

যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ স্থানীয় সময় শুক্রবার (২৩ মে) এক নির্দেশনা জারি করে জানিয়েছেন, এখন থেকে সাংবাদিকদের পেন্টাগনের অধিকাংশ স্থানে প্রবেশ করতে হলে অফিসিয়াল অনুমোদন ও এসকর্ট থাকতে হবে। ট্রাম্প প্রশাসনের পক্ষ থেকে গণমাধ্যমের ওপর আরোপিত সাম্প্রতিক কড়া বিধিনিষেধগুলোর মধ্যে এটিকে একটি নতুন সংযোজন হিসেবে দেখা হচ্ছে। খবর রয়টার্সের।
নতুন এই বিধানগুলো কার্যকর হয়েছে তাৎক্ষণিকভাবে। এর আওতায় ভার্জিনিয়ার আর্লিংটনে অবস্থিত প্রতিরক্ষা দপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে অনুমোদন ও এসকর্ট ছাড়া স্বীকৃত সাংবাদিকদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ এক নির্দেশনায় বলেন, “দপ্তরটি স্বচ্ছতা রক্ষার ব্যাপারে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, একইসঙ্গে জাতীয় গোপন তথ্য ও সংবেদনশীল তথ্য রক্ষা করাও আমাদের দায়িত্ব, যার অননুমোদিত প্রকাশে মার্কিন সেনাদের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে।”
হেগসেথ বলেন, গোপন গোয়েন্দা তথ্য ও সামরিক অভিযান সংক্রান্ত নিরাপত্তা নিশ্চিত করাই এখন দপ্তরের “অপরিবর্তনীয় অগ্রাধিকার”।
মার্কিন সামরিক রিপোর্টারদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন পেন্টাগন প্রেস অ্যাসোসিয়েশন এক বিবৃতিতে বলেছে, এই সিদ্ধান্ত “গণমাধ্যমের স্বাধীনতার ওপর সরাসরি হামলা”।
তারা বলেছে, “অপারেশনাল সিকিউরিটির কথা বলা হলেও, প্রেস কর্পস বিগত কয়েক দশক ধরে রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় প্রশাসনের অধীনেই অনিরাপদ ও অ-গোপনীয় স্থানগুলোতে প্রবেশ করতে পেরেছে, এমনকি ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বরের সন্ত্রাসী হামলার পরেও।”
পেন্টাগনের মুখপাত্র শন পারনেল এ বিষয়ে বলেন, “সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষায় এবং সেনা সদস্যদের অপ্রয়োজনীয় ঝুঁকি থেকে রক্ষায় এই হালনাগাদ পদক্ষেপগুলো জরুরি।”
চলতি জানুয়ারিতে ডোনাল্ড ট্রাম্প আবার প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে পেন্টাগন বেশ কয়েকটি গোপন তথ্য ফাঁসের তদন্ত শুরু করেছে, যার জেরে তিনজন কর্মকর্তাকে প্রশাসনিক ছুটিতে পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া, নিউ ইয়র্ক টাইমস, ওয়াশিংটন পোস্ট, সিএনএন এবং এনবিসি নিউজের মতো পুরনো ও প্রতিষ্ঠিত সংবাদমাধ্যমগুলোকে পেন্টাগনের অফিস স্পেস ছেড়ে দিতে বলা হয়েছে। নতুন এক রোটেশন ব্যবস্থায় তাদের জায়গায় স্থান পেয়েছে ট্রাম্পপন্থী হিসেবে পরিচিত নিউ ইয়র্ক পোস্ট, ব্রেইটবার্ট, ডেইলি কলার এবং ওয়ান আমেরিকা নিউজ নেটওয়ার্কের মতো সংবাদমাধ্যম।
ট্রাম্প প্রশাসনের দাবি, প্রেস কর্পসে বিভিন্ন মিডিয়া হাউসকে প্রতিনিধিত্বের সুযোগ করে দিতেই এই রদবদল।
আরও বিস্তৃতভাবে, প্রশাসন অ-গোপন তথ্য ফাঁস রোধে ডিপার্টমেন্ট অব হোমল্যান্ড সিকিউরিটির কর্মকর্তাদের পলিগ্রাফ (লাই ডিটেক্টর) পরীক্ষার আওতায় আনার উদ্যোগ নিয়েছে। কেউ যদি তা করতে অস্বীকৃতি জানায়, তাহলে তাদের বরখাস্ত করার হুঁশিয়ারিও দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে রয়টার্স।

প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথের নতুন আদেশ অনুযায়ী, পেন্টাগনের সাংবাদিকদের এখন জাতীয় গোয়েন্দা তথ্য ও সংবেদনশীল তথ্য সুরক্ষায় নিজেদের দায়িত্ব স্বীকার করে নিতে হবে। তাদেরকে নতুন একটি প্রেস কার্ড দেওয়া হবে, যেখানে তারা যে গণমাধ্যমের সদস্য তা স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকবে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, “আমরা শিগগিরই আরও কিছু নতুন নিরাপত্তাব্যবস্থা ও প্রেস কার্ড ইস্যুর ক্ষেত্রে বাড়তি যাচাই-বাছাইয়ের ঘোষণা দিতে পারি।”