নাইজেরিয়ায় স্থলমাইন বিস্ফোরণে নিহত ৮

নাইজেরিয়ার উত্তর-পূর্ব বোর্নো রাজ্যে মঙ্গলবার (২৭ মে) একটি স্থলমাইন বিস্ফোরণে জিহাদি-বিরোধী মিলিশিয়ার আট সদস্য নিহত হয়েছেন। এই মিলিশিয়া দলটি নাইজেরিয়ার সেনাবাহিনীকে জিহাদিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে আসছিল। মিলিশিয়া সূত্রের বরাত দিয়ে বুধবার (২৮ মে) এই তথ্য জানিয়েছে বার্তা সংস্থা এএফপি।
লেক চাদ এলাকার মার্তে শহর থেকে আঞ্চলিক রাজধানী মাইদুগুরিতে ফেরার সময় এই ঘটনা ঘটে। মিলিশিয়া সদস্যরা মার্তেতে একটি সামরিক ঘাঁটিতে জিহাদিদের আক্রমণ প্রতিহত করতে সহায়তা করেছিলেন বলে দুটি সূত্র নিশ্চিত করেছে।
এই অঞ্চলের জিহাদি-বিরোধী মিলিশিয়া নেতা বাবাকুরা কোলো এএফপিকে জানিয়েছেন, ‘স্থানীয় সময় মঙ্গলবার দুপুর ২টায় মার্তে এবং ডিকওয়া শহরের মধ্যে গাড়ি চালানোর সময় তাদের গাড়িটি স্থলমাইনের ধাক্কায় পড়ে, যার ফলে গাড়িতে থাকা আটজনই নিহত হন।
মে মাসের মাঝামাঝি সময়ে ইসলামিক স্টেট ওয়েস্ট আফ্রিকা প্রভিন্স এর যোদ্ধারা বোর্নো রাজ্যের মার্তে শহরে একটি সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ করে। ওই হামলায় চারজন সৈন্য নিহত হয়, অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়া হয় ও পরে স্থাপনাটি পুড়িয়ে দেওয়া হয়।
আরেক মিলিশিয়া নেতা ইব্রাহিম লিমান বলেছেন, মঙ্গলবারের হামলায় নিহতরা জিহাদি-বিরোধী মিলিশিয়াদের একটি দল ছিল, যারা শহর পাহারায় সৈন্যদের সাহায্য করার জন্য মার্তেতে অবস্থান করছিল। লিমান একই সংখ্যার কথা জানিয়ে বলেন, নিহতদের মরদেহ ৯০ কিলোমিটার দূরে মাইদুগুরিতে আনা হয়েছে।
নাইজেরিয়ার সামরিক বাহিনী জানিয়েছে, সৈন্যরা মার্তে ঘাঁটিতে ‘অনুপ্রবেশ’ করার একটি জিহাদি প্রচেষ্টা ব্যর্থ করেছে, যার ফলে বিমান সহায়তায় ‘বেশ কয়েকজন পালিয়ে যাওয়া সন্ত্রাসী নিহত’ হয়েছে। এই ঘটনায় দুই সৈন্য নিহত হয়েছে বলেও সামরিক বাহিনী এক বিবৃতিতে জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক মাসগুলোতে আইএসডব্লিউএপি, প্রতিদ্বন্দ্বী বোকো হারাম বোর্নো এবং পার্শ্ববর্তী আদামাওয়া ও ইয়োবে রাজ্যে সম্প্রদায়ের ওপর আক্রমণ বাড়িয়েছে। এএফপির এক পরিসংখ্যান অনুসারে, তারা সামরিক ঘাঁটিতে আক্রমণ তীব্র করেছে, দুই মাসে এক ডজনেরও বেশি দখল করেছে।

জাতিসংঘের তথ্য অনুযায়ী, ১৬ বছরের জিহাদি সংঘাতে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ৪০ হাজারেরও বেশি মানুষ নিহত এবং প্রায় দুই মিলিয়ন মানুষ তাদের ঘরবাড়ি ছেড়ে বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এই সহিংসতা প্রতিবেশী নাইজার, চাদ এবং ক্যামেরুনেও ছড়িয়ে পড়েছে। যার ফলে জিহাদি গোষ্ঠীগুলোর বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য একটি আঞ্চলিক সামরিক জোট গঠন করা হয়েছে।