ট্রাম্পের ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ : কী প্রভাব ফেলবে আমেরিকায়?

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার ‘বিগ বিউটিফুল বিল’ পাশ করিয়ে বড় ধরনের এক রাজনৈতিক জয় পেয়েছে। ৪ জুলাইয়ের মধ্যে বিলটি পাশ করানোর যে লক্ষ্য তিনি নির্ধারণ করেছিলেন, শেষ পর্যন্ত তা পূরণ হয়েছে। তবে, এ নতুন ও বিতর্কিত বিল নিয়ে খোদ রিপাবলিকান দলের ভেতরেই প্রশ্ন উঠেছে।
বিলের মূল বিষয়বস্তু
দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট হওয়ার প্রচারে ট্রাম্প এই বিলের কথা বারবার বলেছেন। ক্ষমতায় এলেই এটি বাস্তবায়নের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। অবশেষে তা সম্ভব হলো। এই বিলে স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতে সরকারি ব্যয় কমানো হয়েছে। এর পাশাপাশি, অবৈধ অভিবাসনপ্রত্যাশীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিপুল অর্থ ব্যয় করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর জন্যও প্রচুর অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে, সামরিক ব্যয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়ানোর কথা বলা হয়েছে।
অভিবাসন : অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধের প্রকল্পে ১৭৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা হবে, যার একটি অংশ মেক্সিকো সীমান্তে পাঁচিল তৈরিতে খরচ হবে। সীমান্তে পুলিশের সংখ্যাও বাড়ানো হবে।
সামরিক খাত : সামরিক খাতে ১৫৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করা হবে, যেখানে ক্ষেপণাস্ত্র ও যুদ্ধজাহাজ তৈরির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। পরমাণু অস্ত্র তৈরিতেও কিছু অর্থ বরাদ্দ হয়েছে।
পরিবেশ ও জ্বালানি : প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে নেওয়া অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত এই বিলের মাধ্যমে বাতিল করা হচ্ছে। ট্রাম্পের নির্বাচনী স্লোগান ‘ড্রিল বেবি ড্রিল’ অনুযায়ী, নতুন করে খনিজ তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস উত্তোলনে বিপুল অর্থ ধার্য করা হয়েছে। বিকল্প শক্তির জন্য সরকারের আগের ব্যয়নীতি পরিবর্তন করা হচ্ছে ও ইলেকট্রিক গাড়ির ছাড় বন্ধ করে দেওয়া হচ্ছে।
বিলের বিরোধিতা ও আশঙ্কা
জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনৈতিক বিশ্লেষক পিটার লোগ ডিডাব্লিউকে বলেছেন, ‘একটি বড় অংশের মানুষ এই বিলের বিরোধিতা করছেন, কারণ নতুন আইনে আমেরিকানদের চিকিৎসা ও সামাজিক নিরাপত্তার ওপর সরকারের ব্যয় কমিয়ে দেওয়া হয়েছে।’
ট্রাম্পের এক সময়ের বন্ধু ইলন মাস্ক থেকে শুরু করে রিপাবলিকান দলের অনেক সদস্যও এই বিলের বিরোধিতা করছেন। তাদের অভিযোগ, ট্রাম্প মার্কিন অর্থনীতিকে ঝুঁকিতে ফেলছেন, যা যেকোনো সময় বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে। পাশাপাশি, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়গুলোকে যেভাবে উপেক্ষা করা হচ্ছে, তা নিয়েও বহু বিশেষজ্ঞ উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। ট্রাম্পের অভিবাসননীতি নিয়েও দেশের অভ্যন্তরে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।