মিয়ানমারে উলফার ৩ শীর্ষ নেতা নিহত, হামলার কথা অস্বীকার করল ভারত

মিয়ানমারের সাগাইং অঞ্চলে ড্রোন ও মিসাইল হামলায় নিষিদ্ধঘোষিত বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ইউনাইটেড লিবারেশন ফ্রন্ট অব আসাম (ইন্ডিপেনডেন্ট) বা উলফার (আই) তিনজন শীর্ষস্থানীয় নেতা নিহত হয়েছেন বলে দাবি করেছে সংগঠনটি। হামলায় আরও অনেক সদস্য আহত হয়েছেন বলেও জানানো হয়েছে। তবে এই হামলার সঙ্গে ভারতীয় সেনাবাহিনী জড়িত নয় বলে জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
রোববার (১৪ জুলাই) উলফা (আই) এক বিবৃতিতে জানায়, ভারতীয় সেনাবাহিনী তাদের মোবাইল ক্যাম্পে এই হামলা চালিয়েছে। যদিও ভারতীয় সেনাবাহিনী ও আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা উভয়েই এ ধরনের অভিযানের সঙ্গে ভারতের কোনো সম্পর্ক নেই বলে জানিয়েছে।
উলফার দাবি অনুযায়ী, রোববার ভোরে মিয়ানমারে তাদের একাধিক মোবাইল ক্যাম্পে ড্রোনের মাধ্যমে হামলা চালানো হয়। প্রথম হামলায় সংগঠনের তথাকথিত "লোয়ার কাউন্সিল"-এর চেয়ারম্যান নয়ন আসম ওরফে নয়ন মেধি নিহত হন এবং প্রায় ১৯ জন আহত হন বলে জানিয়েছে সংবাদ সংস্থা পিটিআই।
এরপর নয়ন আসমের শেষকৃত্যের সময় দ্বিতীয় দফা ড্রোন ও মিসাইল হামলায় নিহত হন সংগঠনের স্বঘোষিত ব্রিগেডিয়ার গণেশ আসম ও কর্নেল প্রদীপ আসম। টাইমস অব ইন্ডিয়া জানিয়েছে, এই হামলাগুলোতে ১৫০টিরও বেশি ইসরায়েলি ও ফরাসি ড্রোন ব্যবহার করা হয়।
এই হামলার ক্ষেত্র ছিল নাগাল্যান্ডের লংওয়া ও অরুণাচল প্রদেশের পাংসাউ পাস সংলগ্ন ভারত-মিয়ানমার সীমান্ত অঞ্চল।
গুয়াহাটিভিত্তিক প্রতিরক্ষা জনসংযোগ কর্মকর্তা লেফটেন্যান্ট কর্নেল মহেন্দ্র রাওয়াত বলেছেন, “এ ধরনের কোনো অভিযানের তথ্য সেনাবাহিনীর কাছে নেই।”
আসামের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্ব শর্মা জানিয়েছেন, “এই হামলার সঙ্গে আসাম পুলিশের কোনো সম্পৃক্ততা নেই এবং আমাদের মাটি থেকে কোনো আক্রমণ চালানো হয়নি।” তিনি আরও বলেন, “এ ধরনের অভিযান হলে সশস্ত্র বাহিনী তা জানায়। আরও তথ্য প্রয়োজন, বিকেলের মধ্যেই বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে যাবে।”
উল্লেখ্য, ২০২১ সালের সামরিক অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমার গৃহযুদ্ধে জর্জরিত। ভারত-মিয়ানমার ১ হাজার ৬৪৩ কিলোমিটার সীমান্তজুড়ে সেনাবাহিনী ও আসাম রাইফেলস নিয়মিত পাহারা দেয়।

২০১৯ সালে ভারত ও মিয়ানমার যৌথভাবে ‘অপারেশন সানরাইজ’ চালিয়ে উলফা (আই), এনএসসিএন ও অন্যান্য বিদ্রোহী গোষ্ঠীর ঘাঁটিতে অভিযান চালিয়েছিল। তবে এবার কোনো ধরনের অভিযান ভারত আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকার করেনি।