তীব্র তাপদাহে ইরানে পানি সংকট, তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি

ভয়াবহ তাপদাহের কবলে পড়েছে ইরান, যার ফলে দেশজুড়ে দেখা দিয়েছে তীব্র পানির সংকট। দেশটির আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, চলতি সপ্তাহটি এ বছরের সবচেয়ে উত্তপ্ত সময় হতে যাচ্ছে। কিছু অঞ্চলে তাপমাত্রা ৫০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১২২ ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে গেছে। খবর আল জাজিরার।
এই পরিস্থিতিতে জনগণকে পানি ও বিদ্যুৎ খরচ কমানোর আহ্বান জানিয়েছে কর্তৃপক্ষ। একই সঙ্গে তেহরান প্রদেশে আগামী বুধবার (২৪ জুলাই) সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।
সরকারি মুখপাত্র ফাতেমেহ মোহাজেরানি রোববার এক্সে (সাবেক টুইটার) বলেন, “চলমান ব্যাপক গরম ও পানি-বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের প্রয়োজনীয়তার কারণে বুধবার তেহরান প্রদেশে সরকারি ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।”
রোববার তেহরানে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে পৌঁছায়, আর সোমবার তা বেড়ে ৪১ ডিগ্রি হতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
তেহরান সিটি কাউন্সিলের চেয়ারম্যান মেহদি চামরান দেশবাসীকে সতর্ক করে বলেছেন, “পানি সরবরাহে ব্যাঘাত এড়াতে সবাইকে পানি সাশ্রয় করতে হবে।” ইরানের একাধিক প্রদেশেও কর্তৃপক্ষ জনগণকে পানি খরচ সীমিত রাখার অনুরোধ জানিয়েছে।
তেহরান প্রাদেশিক পানি ব্যবস্থাপনা সংস্থা জানিয়েছে, শহরটিতে পানি সরবরাহকারী বাঁধগুলোর জলাধার “গত এক শতাব্দীর মধ্যে সর্বনিম্ন স্তরে” নেমে এসেছে।
এক বিবৃতিতে তারা জানায়, “গত কয়েক বছরের কম বৃষ্টিপাতের কারণে বর্তমানে তেহরানের পানি সরবরাহ সংকট চরম পর্যায়ে পৌঁছেছে। পানি খরচ অন্তত ২০ শতাংশ কমাতে হবে।”
শনিবার ইরানের রক্ষণশীল সংবাদপত্র জাভান জানিয়েছে, তেহরানের বিভিন্ন এলাকায় পানির ঘাটতি মোকাবিলায় কর্তৃপক্ষ পানি সরবরাহ কমিয়ে দিয়েছে, যার ফলে কিছু এলাকায় ১২ থেকে ১৮ ঘণ্টা পর্যন্ত পানি বন্ধ থাকছে।
দেশটির জ্বালানি মন্ত্রী আব্বাস আলিয়াবাদি রোববার পানির সরবরাহ কমানো নিয়ে দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, “সম্পদগুলো আরও ভালোভাবে ব্যবস্থাপনার জন্যই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।”

ইরানে পানির সংকট নতুন নয়। দক্ষিণাঞ্চলের মরুভূমি প্রদেশগুলোতে এই সংকট আরও প্রকট, যার পেছনে দায়ী করা হচ্ছে অব্যবস্থাপনা, ভূগর্ভস্থ পানির অতিরিক্ত ব্যবহার এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবকে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ইরান দ্রুততর হারে শুকিয়ে যাচ্ছে এবং যদি এখনই জরুরি ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে ভবিষ্যতে দেশটি আরও ভয়াবহ মানবিক সংকটে পড়তে পারে।