অপারেশন সিঁদুরে পাকিস্তানের ৬টি বিমান ভূপাতিত করা হয় : ভারত

‘অপারেশন সিঁদুর’ সম্পর্কে ভারতের বিমানবাহিনী প্রথম বড় ধরনের তথ্য প্রকাশের অংশ হিসেবে জানিয়েছে, সামরিক অভিযানের সময় তারা পাকিস্তানের ছয়টি বিমান ভূপাতিত করেছে, যার মধ্যে রয়েছে পাঁচটি যুদ্ধবিমান ও একটি বড় আকারের আকাশযান।
ভারতের বিমানবাহিনীর প্রধান এয়ার চিফ মার্শাল অমর প্রীত সিং পাকিস্তানের বিমান বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে জানাতে গিয়ে বলেন, সবচেয়ে বড় যে বিমানটি আমরা ভূপাতিত করেছি তা হলো একটি এইডব্লিউ অ্যান্ড সি (আর্লি ওয়ার্নিং অ্যান্ড কন্ট্রোল সিস্টেম), যা কিনা পাকিস্তানের আকাশ প্রতিরক্ষার জন্য ছিল একটি বড় ধরনের আঘাত। এ ছাড়া মধ্য আকাশে ছয়টি বিমানে আঘাত করা হয়। পাশাপাশি আকাশপথে ভারতের আক্রমণে পাকিস্তানের বিমান ঘাঁটিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়।
ভারতের বেঙ্গালুরুতে ‘ষোড়শ এয়ার চিফ মার্শাল এল এম কাতরে লেকচারে’ দেওয়া বক্তব্যে এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং আরও বলেন, ‘আমরা নিশ্চিতভাবে পাঁচটি বিমান ধ্বংস করেছি এবং একটি বড় বিমান যা কিনা গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে ব্যবহার করা হয়, ধ্বংস করতে পেরেছি। প্রায় ৩০০ কিলোমিটার দূর থেকে এটিতে আঘাত হানা হয়। আমরা বলতে পারি, এটি ভূপৃষ্ঠ থেকে আকাশে চালানো হামলায় সবচেয়ে বড় বিমান ধ্বংসের ঘটনা।’
ভারতের বিমানবাহিনী প্রধান বলেন, ‘আমাদের আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা চমৎকার কাজ করেছে। এস-৪০০ সিস্টেম যা কিনা সম্প্রতি কেনা হয়েছে, এক্ষেত্রে গেম চ্যাঞ্জারের ভূমিকা পালন করেছে। এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার মাধ্যমে তাদের (পাকিস্তান) দূরপাল্লার গ্লাইড বোমা বহনকারী বিমানগুলোকে দূরে রাখা সম্ভব হয়েছিল। এই সিস্টেমের ভেতর তারা (পাকিস্তানি বিমান) অনুপ্রবেশ করতে পারেনি এবং ওইসব সমরাস্ত্রও ব্যবহার করতে পারেনি।’

ভারতীয় বিমানবাহিনী পাকিস্তানের জেকোবাবাদ ও ভোলারিতে অবস্থিত বিমান রক্ষণাবেক্ষণ কেন্দ্র বা হ্যাঙ্গারে হামলা চালায়। ভারতের হামলায় হ্যাঙ্গারে থাকা যুক্তরাষ্ট্রের তৈরি কয়েকটি এফ-১৬ জঙ্গিবিমান এ সময় ধ্বংস করে দেওয়া হয়। ধারণা করা হয়, ভোলারিতেও আরেকটি এইডব্লিউ অ্যান্ড সি এয়ারক্রাফট ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে।
এপি সিং আরও বলেন, আমাদের কাছে তথ্য রয়েছে কমপক্ষে একটি এডব্লিউসি, যা কিনা ওই হ্যাঙ্গারে ছিল এবং তার পাশাপাশি কয়েকটি এফ-১৬ যুদ্ধবিমান যেগুলো কিনা সেখানে রক্ষণাবেক্ষণের জন্য ছিল, সেগুলো পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গেছে।
এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং বলেন, ভারতীয় বিমা বাহিনীর আঘাতে যে ধ্বংসলীলা হয়েছিল তা দেখে পাকিস্তান বুঝতে পেরেছিল, যুদ্ধ অব্যাহত থাকলে তারা আরও ক্ষতির মুখে পড়বে। আর এজন্যই পাকিস্তান দ্রুত যুদ্ধবিরতির উদ্যাগে সম্মত হয়। মে মাসের ১০ তারিখে পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে এই সংঘাত থেমে যায়।
এয়ার চিফ মার্শাল এ পি সিং আরও বলেন, রাজনৈতিক ইচ্ছাশক্তির কারণে ভারতের অভিযান সফল হয়েছে। আমাদের এ বিষয়ে পরিষ্কার দিকনির্দশনা দেওয়া হয়েছিল। আমাদের ওপর কোনো বিধিনিষেধ চাপিয়ে দেওয়া হয়নি। আমরাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা কতদূর যাব। আমাদের পরিকল্পনা প্রণয়ন ও তা বাস্তবায়নে পূর্ণ স্বাধীনতা ছিল।