বিমানকর্মীকে হুমকি দিয়ে জেল, যা জানালেন অভিযুক্তের স্ত্রী

ব্রিটিশ বিমান সংস্থা ভার্জিন আটলান্টিকের এক বিমানকর্মীকে হত্যা ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার অভিযোগে পাকিস্তানি ব্যবসায়ী সালমান ইফতিখারকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। এই রায়ের পর তার স্ত্রী আবীর রিজভী স্বামীর এমন আচরণের জন্য মানসিক অসুস্থতাকে দায়ী করেছেন। খবর এনডিটিভির।
গত ৭ই আগস্ট সালমানের সাজা ঘোষণা করে ব্রিটিশ আদালত। এর পর থেকেই আবীর রিজভী তার ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে একাধিক বার্তা পোস্ট করেন। সেখানে তিনি তার স্বামীর প্রতি সহানুভূতি জানানোর আহ্বান করেন। পাকিস্তানের বাসিন্দা মডেল আবীর রিজভীর ইনস্টাগ্রাম ও টিকটকে পাঁচ লাখেরও বেশি ফলোয়ার রয়েছে।
দ্য নিউ ইয়র্ক পোস্টের তথ্যনুযায়ী আবীর রিজভী তার ইনস্টাগ্রামে লেখেন, ‘মানসিক স্বাস্থ্য কোনো ঠাট্টার বিষয় নয়। প্রতিটি গল্পের পেছনে এমন কষ্ট লুকিয়ে থাকে, যা আপনি দেখতে পান না... বিচার করার আগে বোঝার চেষ্টা করুন। দয়ালু হন। মানবিক হন।’
প্রতিবেদন অনুযায়ী, সালমান ইফতিখার স্টাফিং ম্যাচ নামের একটি নিয়োগ সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা।
কী ঘটেছিল সেই ফ্লাইটে?
ঘটনাটি ঘটে ২০২৩ সালের ৭ই ফেব্রুয়ারি লন্ডন থেকে লাহোরগামী একটি ফ্লাইটে। সালমান ইফতিখার তার তিন সন্তানকে নিয়ে ফার্স্ট ক্লাসে ভ্রমণ করছিলেন। সংবাদমাধ্যম মিররের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ফ্লাইটে তিনি অতিরিক্ত মদ্যপান শুরু করেন। এরপর বিমানকর্মী অ্যাঞ্জি ওয়ালশকে লক্ষ্য করে আক্রমণাত্মক কথাবার্তা বলেন এবং তাকে ‘জাতিবিদ্বেষী’ বলে চিৎকার করেন। ওয়ালশকে হত্যা ও গণধর্ষণের হুমকি দেন।
এসব কাণ্ড ঘটানোর পর যদিও তিনি কোনো বাধা ছাড়াই পাকিস্তানে বিমান থেকে নেমে যান। তবে পরের বছর ২০২৪ সালের ১৬ই মার্চ ব্রিটিশ পুলিশ ইংল্যান্ডের ইভারে তার বাড়ি থেকে তাকে আটক করে।

আদালতের রায়
গত ৫ই আগস্ট আইলওয়ার্থ ক্রাউন কোর্টে ওয়ালশকে হত্যার হুমকি দেওয়ার কথা স্বীকার করেন সালমান ইফতিখার। এরপর তাকে ১৫ মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
কোর্টে দেওয়া এক বিবৃতিতে ভুক্তভোগী ওয়ালশ বলেন, এই ঘটনার পর থেকে তিনি মানসিকভাবে এতটাই বিপর্যস্ত যে, ১৪ মাস ধরে কাজে ফিরতে পারেননি। আমি একজন শক্তিশালী, সাহসী ও হাসিখুশি বিমানকর্মী ছিলাম এবং আমার কাজকে ভালোবাসতাম। ৩৭ বছরের কর্মজীবনে আমি কখনও এমন পরিস্থিতিতে পড়িনি। কিন্তু সে আমার কাছ থেকে সবকিছু কেড়ে নিয়েছে।
ভার্জিন আটলান্টিক এক বিবৃতিতে ওয়ালশের সাহসের প্রশংসা করেছে। সংস্থাটির একজন মুখপাত্র বলেন, গ্রাহক এবং কর্মীদের নিরাপত্তা আমাদের প্রধান অগ্রাধিকার... যারা ‘অগ্রহণযোগ্য’ আচরণের মাধ্যমে গোলযোগ সৃষ্টি করবে, তাদের বিরুদ্ধে আমরা আইনি ব্যবস্থা নিতে দ্বিধা করব না।