চীন সীমান্তে উত্তর কোরিয়ার গোপন সামরিক ঘাঁটির সন্ধান

চীনের সীমান্তের কাছাকাছি গোপন সামরিক ঘাঁটি তৈরি করেছে উত্তর কোরিয়া। যেখানে পিয়ংইয়ংয়ের নতুন দূরপাল্লার পারবাণবিক ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র থাকতে পারে। বুধবার (২০ আগস্ট) ওয়াশিংটন-ভিত্তিক সেন্টার ফর স্ট্র্যাটেজিক অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজের (সিএসআইএস) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর এএফপির।
সিএসআইএসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিনপুং-ডং নামের ‘অঘোষিত’ এই ক্ষেপণাস্ত্র পরিচালনাকারী ঘাঁটিটি চীনা সীমান্ত থেকে প্রায় ২৭ কিলোমিটার (১৭ মাইল) দূরে অবস্থিত। উত্তর পিয়ংগান প্রদেশের এই স্থাপনায় ছয় থেকে নয়টি পারমাণবিক ক্ষমতাসম্পন্ন আন্তঃমহাদেশীয় ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র (আইসিবিএম) এবং সেগুলোর উৎক্ষেপণ যন্ত্র রয়েছে। এই অস্ত্রগুলো পূর্ব এশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের জন্য সম্ভাব্য পারমাণবিক হুমকি।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, এই ঘাঁটিটি উত্তর কোরিয়ার ১৫ থেকে ২০টি অঘোষিত ক্ষেপণাস্ত্র ঘাঁটির মধ্যে একটি। যেটির কথা উত্তর কোরিয়া কখনো ঘোষণা করেনি। এমনকি এর এর আগে যুক্তরাষ্ট্র ও উত্তর কোরিয়ার মধ্যে নিরস্ত্রীকরণ কোনো আলোচনারও অংশ ছিল না।
২০১৯ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একটি বৈঠক ব্যর্থ হওয়ার পর উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ইউক্রেনে যুদ্ধের পর উত্তর কোরিয়া রাশিয়ার সঙ্গে আরও ঘনিষ্ঠ হয়েছে। দেশটির নেতা কিম জং উন সম্প্রতি দেশের পারমাণবিক সক্ষমতার ‘দ্রুত প্রসারের’ আহ্বান জানিয়েছেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, নতুন এই ঘাঁটি থেকে বোঝা যায় যে উত্তর কোরিয়া তাদের পারমাণবিক সক্ষমতা বাড়িয়ে চলেছে।
সিএসআইএস এর বিশ্লেষকদের মতে, সংকট বা যুদ্ধের সময় লঞ্চার ও ক্ষেপণাস্ত্রগুলো বিশেষ ইউনিটের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করে দেশের যেকোনো গোপন স্থান থেকে উৎক্ষেপণ করা সম্ভব।
২০১৯ সালে ভিয়েতনামের হ্যানয়ে কিম ও তৎকালীন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মধ্যে শীর্ষ বৈঠকটি ভেঙে যায়। কারণ নিষেধাজ্ঞা থেকে মুক্তির বিনিময়ে পিয়ংইয়ং কী ছাড় দেবে তা নিয়ে দুই পক্ষ একমত হতে পারেনি। তখন থেকে উত্তর কোরিয়া নিজেদেরকে একটি ‘অপরিবর্তনীয়’ পারমাণবিক রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করেছে।
দক্ষিণ কোরিয়া ও পশ্চিমা গোয়েন্দা সংস্থাগুলো জানিয়েছে, উত্তর কোরিয়া ২০২৪ সালে ১০ হাজারের বেশি সেনা, কামানের গোলা, ক্ষেপণাস্ত্র ও দূরপাল্লার রকেট ব্যবস্থা রাশিয়ায় পাঠিয়েছে।

ওয়াশিংটন জানিয়েছে, তাদের কাছে প্রমাণ রয়েছে যে ইউক্রেনে লড়াইয়ে সহায়তার বিনিময়ে উত্তর কোরিয়াকে উন্নত মহাকাশ ও স্যাটেলাইট প্রযুক্তিতে সহায়তা করছে রাশিয়া। বিশ্লেষকরা বলেন, দুই দেশের স্যাটেলাইট লঞ্চার ও আইসিবিএম-এর অনেক প্রযুক্তি অভিন্ন।