পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রুশ ড্রোন ভূপাতিত, ন্যাটোর প্রতিরক্ষা জোরদার

পোল্যান্ডের আকাশসীমায় রাশিয়ার ড্রোন অনুপ্রবেশের ঘটনায় ন্যাটো জোটের পূর্ব সীমান্ত সুরক্ষিত করতে বেশ কয়েকটি সদস্য রাষ্ট্র সেনা, কামান ও বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা পাঠাচ্ছে। বুধবার (১০ সেপ্টেম্বর) ভোরে পোল্যান্ডের আকাশসীমা অতিক্রম করার পর তিনটি রুশ ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করা হয়। এই ঘটনাকে ২০২২ সালে ইউক্রেনে রাশিয়ার আক্রমণের পর সবচেয়ে গুরুতর ঘটনা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) ড্রোন অনুপ্রবেশের পর নেদারল্যান্ডস, চেক প্রজাতন্ত্র, জার্মানি, ফ্রান্স ও যুক্তরাজ্য পোল্যান্ডকে সহায়তার প্রস্তাব দিয়েছে।
এদিকে, নেদারল্যান্ডস ও চেক প্রজাতন্ত্র পোল্যান্ডে বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা, কামান, হেলিকপ্টার ও ৪০০ জনের বেশি সৈন্য পাঠাচ্ছে। জার্মানি পোল্যান্ডের ওপর তাদের বিমান পুলিশিং কার্যক্রম বাড়াবে বলেছে।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ পোল্যান্ডের আকাশসীমা রক্ষায় তিনটি রাফায়েল যুদ্ধবিমান পাঠানোর ঘোষণা দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা রাশিয়ার ক্রমবর্ধমান হুমকির কাছে নতি স্বীকার করব না।
পোল্যান্ডের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ভ্লাদিস্লা কোসিনিয়াক-কামিজ তার দেশের অংশীদারদের কাছ থেকে পাওয়া সহায়তার প্রস্তাবের তালিকা করে বলেন, পোল্যান্ড তার ইতিহাস জুড়ে বারবার সংহতির কথা ও খালি অঙ্গভঙ্গি শুনেছে। আজ, আমাদের কাছে সুনির্দিষ্ট ঘোষণা রয়েছে।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প এই কথিত অনুপ্রবেশকে ভুল বলে অভিহিত করেছেন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পুরো পরিস্থিতির সঙ্গে সম্পর্কিত কিছু নিয়ে আমি খুশি নই, তবে আশা করি এটি শেষ হতে চলেছে। তার এই মন্তব্যে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে।
এই ড্রোন অনুপ্রবেশ এমন এক সময়ে ঘটল যখন রাশিয়া ও বেলারুশের মধ্যে একটি বড় যৌথ সামরিক মহড়া, শুক্রবার (১২ সেপ্টেম্বর) থেকে শুরু হতে যাচ্ছে। এর প্রতিক্রিয়ায় পোল্যান্ড বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) তাদের বেলারুশ সীমান্ত বন্ধ করে দিয়েছে। রাশিয়া এই পদক্ষেপকে ধ্বংসাত্মক বলে অভিহিত করে যত দ্রুত সম্ভব সিদ্ধান্তটি পুনর্বিবেচনা করার আহ্বান জানিয়েছে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার এই অহংকারী আচরণের প্রতিক্রিয়ায় ইউরোপের জন্য একটি যৌথ বিমান প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
তবে এ ঘটনার প্রেক্ষিতে রাশিয়া জানিয়েছে, পোল্যান্ডের কোনো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত করার কোনো ইচ্ছা তাদের ছিল না। এই ঘটনার বিষয়ে কোনো মন্তব্য করবে না বলে জানিয়েছে তারা।

অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার ন্যাটোর শীর্ষ সামরিক কমান্ডার অ্যালেক্সাস গ্রিনকিউইচও স্বীকার করেছেন, এই কাজটি ইচ্ছাকৃত কিনা তা এখনো জানা যায়নি। এছাড়া পোলিশ আকাশসীমায় প্রবেশকারী ড্রোনের সঠিক সংখ্যা এখনো নিশ্চিত নয়।