মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের গোয়েন্দা প্রধান বরখাস্ত

মার্কিন প্রতিরক্ষা দপ্তরের গোয়েন্দা সংস্থার (ডিআইএ) প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেফ্রি ক্রুজকে বরখাস্ত করেছেন দেশটির প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। ক্রুজের নেতৃত্বাধীন সংস্থার প্রাথমিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, জুন মাসে ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় সীমিত ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই তথ্য প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক হওয়ায় ট্রাম্প ক্ষুব্ধ হন বলে জানা গেছে। খবর আল জাজিরার।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (২২ আগস্ট) এই বরখাস্তের ঘটনায় আরও দুই জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা হলেন- নৌবাহিনীর রিজার্ভ বাহিনীর প্রধান ভাইস অ্যাডমিরাল ন্যান্সি লাকোর এবং নৌবাহিনীর বিশেষ অভিযানের প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মিল্টন স্যান্ডস। এ তথ্য নিশ্চিত করেছে সংবাদ সংস্থা রয়টার্স ও অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস।
একজন জ্যেষ্ঠ প্রতিরক্ষা কর্মকর্তা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, ক্রুজ আর ডিআইএর পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন না। তবে বরখাস্তের সুনির্দিষ্ট কারণ জানানো হয়নি।
এটি ট্রাম্প প্রশাসনের সাম্প্রতিক বরখাস্তের ধারাবাহিকতার অংশ। চলতি বছর দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে তিনি শীর্ষ সামরিক নেতৃত্বে ব্যাপক রদবদল করছেন। ফেব্রুয়ারিতে কোনো কারণ না দেখিয়েই জয়েন্ট চিফস অব স্টাফের চেয়ারম্যান জেনারেল চার্লস “সিকিউ” ব্রাউনকে সরিয়ে দেন ট্রাম্প।
এছাড়া ইতোমধ্যে বরখাস্ত হয়েছেন মার্কিন নৌবাহিনী ও কোস্টগার্ড প্রধান, ন্যাশনাল সিকিউরিটি এজেন্সির প্রধান, বিমানবাহিনীর উপপ্রধান, ন্যাটোতে নিযুক্ত এক নৌ-অ্যাডমিরাল এবং শীর্ষ তিন সামরিক আইন কর্মকর্তা। গত সোমবার হঠাৎ করেই মার্কিন বিমানবাহিনীর প্রধানও অর্ধেক মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন।
এত বিপুল সংখ্যক জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তার ছাঁটাইয়ে মার্কিন কংগ্রেসের ডেমোক্র্যাট সদস্যরা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। সিনেট ইন্টেলিজেন্স কমিটির ভাইস চেয়ারম্যান মার্ক ওয়ার্নার বলেন, “আবারও এক শীর্ষ জাতীয় নিরাপত্তা কর্মকর্তাকে বরখাস্তের ঘটনা প্রমাণ করে, ট্রাম্প প্রশাসন গোয়েন্দা তথ্যকে জাতীয় স্বার্থের চেয়ে আনুগত্য যাচাইয়ের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে।”
অন্যদিকে প্রতিরক্ষামন্ত্রী হেগসেথ দাবি করেছেন, প্রেসিডেন্ট কেবলমাত্র তার পছন্দমতো নেতৃত্বকে দায়িত্বে বসাচ্ছেন।

এই ঘটনার মাত্র দুই দিন আগে জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসি গ্যাবার্ড ঘোষণা দেন, ট্রাম্পের নির্দেশে ৩৭ জন বর্তমান ও সাবেক গোয়েন্দা কর্মকর্তার নিরাপত্তা ছাড়পত্র বাতিল করা হয়েছে। পাশাপাশি তার কার্যালয়ে বড় ধরনের সংস্কারের ঘোষণা দিয়ে জনবল ৪০ শতাংশ কমিয়ে আনতে এবং বছরে ৭০০ মিলিয়ন ডলার সাশ্রয়ের পরিকল্পনা প্রকাশ করেন তিনি।