রাশিয়ার তেল কেনা বন্ধ করতে ন্যাটো মিত্রদের প্রতি ট্রাম্পের আহ্বান

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প জানিয়েছেন, তিনি রাশিয়ার বিরুদ্ধে বড় ধরনের নিষেধাজ্ঞা দিতে প্রস্তুত। তবে শর্ত হলো—সব ন্যাটো মিত্র দেশকে মস্কো থেকে তেল কেনা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে হবে এবং নিজেদেরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করতে হবে।
স্থানীয় সময় শনিবার (১৩ সেপ্টেম্বর) ট্রুথ সোশ্যালে দেওয়া এক পোস্টে ট্রাম্প লেখেন, “আমি বড় নিষেধাজ্ঞা দিতে প্রস্তুত, তবে তখনই যখন সব ন্যাটো দেশ একই পদক্ষেপ নেবে এবং রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কেনা বন্ধ করবে।”
তিনি প্রস্তাব দেন, ন্যাটো দেশগুলো যৌথভাবে চীনের ওপর ৫০ থেকে ১০০ শতাংশ শুল্ক আরোপ করুক, যাতে রাশিয়ার অর্থনৈতিক নির্ভরতা দুর্বল হয়।
ট্রাম্প অভিযোগ করেন, ন্যাটোর প্রতিশ্রুতি যুদ্ধ জেতার ক্ষেত্রে শতভাগ নয় এবং কিছু সদস্য এখনও রাশিয়ার তেল কিনছে। তার ভাষায়, “এটি আপনাদের রাশিয়ার সঙ্গে দরকষাকষির অবস্থানকে দুর্বল করছে।”
চীন ও ভারতের পর ন্যাটো সদস্য দেশ তুরস্ক রাশিয়ার তেলের তৃতীয় বৃহত্তম ক্রেতা । এছাড়া হাঙ্গেরি ও স্লোভাকিয়াও রাশিয়ার কাছ থেকে তেল কিনছে।
ট্রাম্প হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, “যদি ন্যাটো আমার নির্দেশ মেনে চলে, যুদ্ধ দ্রুত শেষ হবে। না হলে আপনারা কেবল আমার সময় নষ্ট করছেন।”
সীমান্তে উত্তেজনা: পোল্যান্ড-রোমানিয়ার আকাশসীমায় ড্রোন হামলা
গত সপ্তাহে রাশিয়ার ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বিমান হামলার সময় পোল্যান্ডের আকাশসীমা লঙ্ঘিত হয়। ঘটনাটিকে কেন্দ্র করে ন্যাটো সদস্য দেশ প্রথমবারের মতো রাশিয়ার যুদ্ধে সরাসরি গুলি চালায়।
শনিবার পোল্যান্ড জানায়, রাশিয়ার ড্রোন হামলার সময় তারা ন্যাটো মিত্রদের সঙ্গে হেলিকপ্টার ও বিমান মোতায়েন করেছে। রোমানিয়াও একইভাবে দুইটি এফ-১৬ জঙ্গিবিমান উড়িয়ে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি রাশিয়ার সঙ্গে ব্যবসা করা দেশগুলোর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছেন। তিনি এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “যেসব দেশ এখনও রাশিয়ার সঙ্গে তেল ও গ্যাসের ব্যবসা করছে, তাদের ওপর শুল্ক আরোপ করা সঠিক সিদ্ধান্ত।”

সম্প্রতি ট্রাম্প আলাস্কায় রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেন এবং পরে জেলেনস্কি ও ইউরোপীয় নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করেন। তবে এখনও শান্তিচুক্তির পথে উল্লেখযোগ্য কোনো অগ্রগতি হয়নি।
এদিকে মস্কো দাবি করেছে, তারা ইউক্রেনের দ্নিপ্রোপেত্রোভস্ক অঞ্চলের নভোমাইকোলাইভকা গ্রাম দখল করেছে। যদিও ইউক্রেন বলছে, গ্রামটি এখনও তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে।
রাশিয়া বর্তমানে ইউক্রেনের প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখল করে রেখেছে এবং পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চল থেকে ইউক্রেন সেনা প্রত্যাহারকে যুদ্ধবিরতির শর্ত হিসেবে তুলে ধরছে, যা কিয়েভ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেছে।