টেসলার ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের শেয়ার কিনলেন মাস্ক

টেসলার প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের শেয়ার কিনেছেন বিলিয়নিয়ার ইলন মাস্ক। যা কোম্পানির প্রতি আস্থার বার্তা হিসেবে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয় সময় সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) এ খবর প্রকাশের পর টেসলার শেয়ারের দাম এক লাফে ৬ শতাংশের বেশি বেড়ে যায়। খবর বিবিসির।
ইতোমধ্যে টেসলায় মাস্কের প্রায় ১৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। তবে দীর্ঘদিন ধরেই তিনি কোম্পানির ওপর আরও বেশি নিয়ন্ত্রণ নিতে চান। টেসলাকে তিনি রোবোট্যাক্সি, অটোমেশন ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তায় (এআই) বড় আকারের বিনিয়োগে চাপ দিয়ে আসছেন।
সম্প্রতি কোম্পানির বোর্ড প্রায় ১ ট্রিলিয়ন ডলারের একটি ক্ষতিপূরণ পরিকল্পনা প্রস্তাব করেছে, যাতে নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ হলে মাস্ককে সর্বোচ্চ ১২ শতাংশ শেয়ার দেওয়া হবে। এছাড়া গত মাসে বোর্ড তাকে ২৯ বিলিয়ন ডলারের শেয়ার দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, যা ২০১৮ সালের একটি বড় প্যাকেজ আদালতে বাতিল হওয়ার পর “অস্থায়ী পুরস্কার” হিসেবে নির্ধারণ করা হয়।
প্রস্তাবগুলো মাস্কের সঙ্গে আলোচনার পর আসে, যেখানে তিনি কোম্পানির ২৫ শতাংশ শেয়ারের দাবি জানান। এমনকি মাঝে মাঝে তিনি টেসলা ছেড়ে দেওয়ার হুমকিও দেন।
এজে বেলের আর্থিক বিশ্লেষণ প্রধান ড্যানি হিউসন বলেন, মাস্ক সম্ভবত টেসলায় তার শেয়ারের অংশীদারিত্ব বাড়াতে চাইছেন। “বাজার পছন্দ করে যখন কোনো প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ কর্মকর্তা নিজের কোম্পানির শেয়ার কেনেন। এতে বোঝা যায় তারা ভবিষ্যৎ নিয়ে ইতিবাচক।”
তবে তিনি মনে করেন, এর পেছনে অন্য উদ্দেশ্যও থাকতে পারে। তার মতে, “এক ধরনের কটাক্ষ করলে বলা যায়, ল্যারি এলিসন বিশ্বের ধনীতম ব্যক্তি হওয়ার পর মাস্ক টেসলার শেয়ারের দাম বাড়িয়ে ফের শীর্ষ স্থানে ফিরতে চাইছেন।”

প্রায় ২৫ লাখ শেয়ার মাস্ক গত শুক্রবার কিনে নেন, যা সোমবার নিয়ন্ত্রক সংস্থার নথিতে প্রকাশিত হয়েছে। ২০২০ সালের পর এটাই তার প্রথম খোলা বাজারে শেয়ার কেনা।
এ বছর টেসলার বিক্রি কমেছে এবং প্রতিযোগিতা বেড়েছে। একই সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রে ইলেকট্রিক কারের জন্য কর রেয়াত শেষ হওয়ায় কোম্পানিটি চাপের মুখে পড়েছে। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে মাস্কের গভীর সম্পৃক্ততাও কোম্পানির ভাবমূর্তিকে আঘাত করেছে।
২০২৪ সালের নির্বাচনে তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে সমর্থন করেছিলেন, তবে এ বছর শুরুর দিকে তাদের মধ্যে বড় ধরনের বিরোধ তৈরি হয়। এছাড়া যুক্তরাজ্য ও জার্মানিতে ডানপন্থী রাজনীতির পক্ষেও তাকে সক্রিয় থাকতে দেখা গেছে।
গত শনিবার লন্ডনে কট্টর ডানপন্থী কর্মী টমি রবিনসনের আয়োজিত সমাবেশে ভিডিও লিঙ্কে বক্তব্য দেওয়ার সময় মাস্ককে “উসকানিমূলক ভাষা” ব্যবহারের অভিযোগে ব্রিটিশ সরকার সমালোচনা করেছে। সেখানে তিনি বলেন, সহিংসতা আসছে, লড়াই না করলে মরতে হবে।
টেসলার বোর্ড বলেছে, মাস্ককে ক্ষতিপূরণ পরিকল্পনা দেওয়ার উদ্দেশ্য আংশিকভাবে ছিল রাজনৈতিক সম্পৃক্ততা থেকে তাকে ধীরে ধীরে দূরে সরিয়ে আনা। তবে বোর্ড চেয়ার রবিন ডেনহোম গত সপ্তাহে ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “মাস্ক তার ব্যক্তিগত রাজনৈতিক অবস্থান যাই হোক না কেন, তিনি টেসলার জন্য সঠিক সিইও। কোম্পানির রূপান্তরমূলক সময়ে তিনি সামনের সারিতে থাকবেন।”