হামলার ঘটনায় কাতারের কাছে ক্ষমা চাইলেন নেতানিয়াহু

দোহায় হামাস নেতাদের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর নজিরবিহীন হামলায় এক কাতারি নাগরিক নিহত হওয়ার ঘটনায় কাতারের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু।
স্থানীয় সময় সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও নেতানিয়াহু যৌথভাবে হোয়াইট হাউসে কাতারের প্রধানমন্ত্রী শেখ মোহাম্মদ বিন আবদুর রহমান আল থানির সঙ্গে ফোনালাপে এই ক্ষমা প্রার্থনা করেন। খবর আল জাজিরার।হোয়াইট হাউসের এক বিবৃতিতে বলা হয়, “প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গভীর দুঃখ প্রকাশ করেছেন যে, ইসরায়েলের ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় কাতারে হামাসের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানার সময় অনিচ্ছাকৃতভাবে এক কাতারি সেনা নিহত হয়েছেন। তিনি কাতারের সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘনের জন্য অনুতাপ প্রকাশ করেন এবং প্রতিশ্রুতি দেন ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা আর হবে না।”
৯ সেপ্টেম্বর দোহায় সংঘটিত ওই হামলায় পাঁচজন হামাস সদস্য ও এক কাতারি নিরাপত্তা কর্মকর্তা নিহত হন। লক্ষ্যবস্তু ছিল হামাসের শীর্ষ নেতারা, যারা যুক্তরাষ্ট্র-সমর্থিত যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব নিয়ে আলোচনায় যুক্ত ছিলেন। তবে তারা প্রাণে বেঁচে যান।
এটি ছিল কাতারের মাটিতে ইসরায়েলের প্রথম হামলা। কাতার মধ্যপ্রাচ্যে যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে বড় সামরিক ঘাঁটি আল উদেইদের স্বাগতিক দেশ এবং দীর্ঘদিন ধরে যুদ্ধবিরতি আলোচনার মধ্যস্থতাকারীর ভূমিকা পালন করে আসছে।
জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস হামলাটিকে কাতারের সার্বভৌমত্বের স্পষ্ট লঙ্ঘন হিসেবে নিন্দা জানিয়েছেন। হামলার কয়েক দিন পর দোহায় প্রায় ৬০টি মুসলিম দেশের প্রতিনিধি একত্রিত হয়ে কাতারের প্রতি সংহতি প্রকাশ করেন।
কাতারের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, “আমরা যুক্তরাষ্ট্রের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানাই এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর ক্ষমাপ্রার্থনাকে গ্রহণ করছি। কাতারের সার্বভৌমত্বে আর আঘাত হানা হবে না—এই নিশ্চয়তা আমাদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।”

হামাদ বিন খলিফা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক সুলতান বারাকাত বলেন, “কাতার শুরু থেকেই বলেছিল, প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়া এবং ভবিষ্যতে এ ধরনের হামলা আর হবে না—এই নিশ্চয়তা ছাড়া তারা মধ্যস্থতা চালিয়ে যেতে পারবে না। তাই এই পদক্ষেপটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”