ভেনেজুয়েলা উপকূলে মার্কিন যুদ্ধবিমান, ‘সামরিক হয়রানি’ বলে নিন্দা কারাকাসের

ভেনিজুয়েলার সরকার তাদের সীমান্তের কাছে মার্কিন এফ-৩৫ যুদ্ধবিমানের উপস্থিতিকে ‘অবৈধ অনুপ্রবেশ’ ও ‘সামরিক হয়রানি’ আখ্যা দিয়ে তীব্র নিন্দা জানিয়েছে। দেশটির অভিযোগ, এটি ‘জাতির নিরাপত্তার জন্য হুমকি’। খবর আল জাজিরার।
বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) ভেনেজুয়েলার প্রতিরক্ষামন্ত্রী জেনারেল ভ্লাদিমির পাদ্রিনো বলেছেন, তারা কমপক্ষে পাঁচটি এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান শনাক্ত করেছেন। তিনি এটিকে ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ভেনেজুয়েলার উপকূলের কাছে আনার সাহস করেছে’ বলে উল্লেখ করেন।
পাদ্রিনো একটি বিমানঘাঁটি থেকে বক্তব্য দেওয়ার সময় বলেন, আমরা তাদের ওপর নজর রাখছি... এবং এটি আমাদের ভয় দেখায় না। এটি ভেনেজুয়েলার জনগণকে ভয় দেখায় না। তিনি আরও বলেন, আমাদের ক্যারিবিয়ান সাগরের কাছাকাছি উড়ন্ত এই বিমানগুলোর উপস্থিতি একটি উসকানি, জাতির নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
ভেনেজুয়েলার পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের যৌথ বিবৃতি বলা হয়েছে, মার্কিন যুদ্ধবিমানগুলো আমাদের উপকূল থেকে ৭৫ কিলোমিটার (৪৬.৬ মাইল) দূরে শনাক্ত করা হয়েছে। যদিও এই দূরত্ব ভেনেজুয়েলার আকাশসীমা (উপকূল থেকে ২২ কিলোমিটার) লঙ্ঘনের জন্য যথেষ্ট নয়, তবুও মন্ত্রণালয়গুলো যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন ও ক্যারিবিয়ান সাগরে বেসামরিক বিমান চলাচলকে বিপন্ন করার অভিযোগ এনেছে।
বিবৃতিতে ভেনেজুয়েলা মার্কিন যুদ্ধ সচিব পিটার হেগসেথকে অবিলম্বে তার বেপরোয়া, রোমাঞ্চকর ও যুদ্ধাভিলাষী ভঙ্গি বন্ধ করার জন্য অনুরোধ করেছে, যা ক্যারিবীয় অঞ্চলের শান্তিকে বিঘ্নিত করছে।
এই ঘটনাটি কয়েক সপ্তাহের উত্তেজনার পরে ঘটল। মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ক্যারিবীয় অঞ্চলের একটি মার্কিন এলাকা পুয়ের্তো রিকোতে এফ-৩৫ স্টিলথ যুদ্ধবিমান প্রেরণ করেছেন ও এই অঞ্চলে আটটি মার্কিন যুদ্ধজাহাজ এবং একটি পারমাণবিক সাবমেরিন মোতায়েন করেছেন। ট্রাম্পের দাবি, এটি মাদক কার্টেলের বিরুদ্ধে অভিযান, যাদের এখন ‘বেআইনি যোদ্ধা’ হিসেবে বিবেচনা করা হবে।

এর আগে ট্রাম্প প্রশাসন ল্যাটিন আমেরিকান মাদক কার্টেলগুলোকে ‘মাদক-সন্ত্রাসী’ হিসেবে পুনর্বিবেচনা করেছে। এই অভিযানের অংশ হিসেবে ভেনেজুয়েলার উপকূলে নৌকাগুলোতে বিমান হামলা দেখা গেছে, যাতে এ পর্যন্ত ১৪ জন নিহত হয়েছেন। কারাকাসের কর্মকর্তারা এটিকে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বলে বর্ণনা করেছেন।
ভেনেজুয়েলার রাষ্ট্রপতি নিকোলাস মাদুরো অভিযোগ করেছেন, ট্রাম্পের এই তথাকথিত মাদকবিরোধী অভিযান আসলে তাঁর দেশে শাসন ব্যবস্থার পরিবর্তন আনার একটি গোপন প্রচেষ্টা।
তবে এ বিষয়ে পেন্টাগন এখনও কোনো মন্তব্য করেনি।