সুমুদ ফ্লোটিলায় ইসরায়েলি হামলার পর ৪৫০ জনেরও বেশি আটক

ইসরায়েলি নৌবাহিনী অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার দিকে যাচ্ছিল এমন একটি আন্তর্জাতিক ত্রাণবহরে হামলা চালিয়ে ৪৭টি দেশের ৪৫০ জনেরও বেশি কর্মীকে আটক করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (২ অক্টোবর) এই তথ্য জানিয়েছে ত্রাণবহরটির আয়োজকরা। খবর আনাদুলুর।
গ্লোবাল সুমুদ ফ্লোটিলা মার্কিন সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম ইনস্টাগ্রামে জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনী ৪২টি নৌকা অবৈধভাবে আটক করেছে ও তাদের যাত্রীদের অবৈধভাবে অপহরণ করা হয়েছে। আয়োজকরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, বিশ্ব দেখল যখন বেসামরিক লোকেরা অবরোধের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানায় তখন কী ঘটে।
কর্মীদের আটক করার পর দক্ষিণ ইসরায়েলের আশদোদ বন্দরে স্থানান্তর করা হয়েছে বলে সুমুদ ফ্লোটিলা নিশ্চিত করেছে। ইসরায়েলি
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, আটক কর্মীরা আশদোদ বন্দরে যাচ্ছেন, যেখান থেকে তাদের ইউরোপে পাঠানো হবে।
আটক হওয়া কর্মীদের মধ্যে ছিলেন স্পেনীয়, ইতালীয়, ব্রাজিলীয়, তুর্কি, গ্রিক, আমেরিকান, জার্মান, সুইডিশ, ব্রিটিশ ও ফরাসি নাগরিকসহ আরও অনেকে।
ইসরায়েলি পাবলিক ব্রডকাস্টার কেন এর আগে জানিয়েছিল, নৌবাহিনী ১২ ঘণ্টার অভিযানে প্রায় ৪০০ অংশগ্রহণকারী বহনকারী ৪১টি জাহাজ আটক করেছে ও সেগুলোকে আশদোদ বন্দরে টেনে আনা হয়েছে।
ফ্লোটিলা জানিয়েছে, ইসরায়েলি বাহিনীর আক্রমণে জাহাজগুলো যখন গাজা থেকে ৮০ নটিক্যাল মাইল (১৪৮ কিলোমিটার) দূরে ছিল, তখনই আক্রমণটি ঘটে। আক্রমণের সময় কর্মীরা সিগন্যাল জ্যাম ও যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার খবর দেন।

গাজায় অবরোধ ভাঙার আন্তর্জাতিক কমিটি (আইসিবিএসজি) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ এনেছে। তারা বলেছে, নৌবাহিনী একটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে, জলকামান মোতায়েন করেছে ও জোরপূর্বক জাহাজে উঠে বিশ্বের প্রায় ৫০টি দেশের শান্তিপূর্ণ বন্দিদের সঙ্গে নির্মম আচরণ করেছে।
মানবিক সাহায্য ও চিকিৎসা সামগ্রী বোঝাই এই নৌবহরটি আগস্টের শেষের দিকে যাত্রা শুরু করে। কয়েক বছরের মধ্যে এই প্রথম প্রায় ৫০টি জাহাজ একসঙ্গে গাজার দিকে যাত্রা করেছিল।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর ত্রাণবহরের সুরক্ষার আবেদন ও জাতিসংঘের সতর্কতা সত্ত্বেও ইসরায়েলি অভিযানটি চালানো হলো। দখলদার শক্তি হিসেবে ইসরায়েল এর আগেও গাজাগামী জাহাজে আক্রমণ করেছে।
ইসরায়েল প্রায় ১৮ বছর ধরে গাজার ওপর অবরোধ বজায় রেখেছে, যা মার্চ মাসে আরও কঠোর করা হয়েছে। এর ফলে ছিটমহলটি দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে ৬৬ হাজার ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।