‘সুমুদ ফ্লোটিলা’র শেষ জাহাজ ম্যারিনেটকেও আটক করল ইসরায়েল

ইসরায়েলি সেনাবাহিনী দ্বারা অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় মানবিক সহায়তা নিয়ে যেতে চাওয়া আন্তর্জাতিক ফ্লোটিলার সমস্ত জাহাজ আটক করেছে। এর মধ্য দিয়ে কয়েক ডজন জাহাজ থেকে প্রায় ৫০০ কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হলো। খবর আলজাজিরার।
লাইভস্ট্রিম ভিডিওতে দেখা গেছে, শুক্রবার (৩ অক্টোবর) সকালে ইসরায়েলি বাহিনী জোরপূর্বক পোলিশ পতাকাবাহী ম্যারিনেট নামের শেষ জাহাজটিতে উঠে পড়ে। ইঞ্জিন সমস্যার কারণে মূল দলের থেকে পিছিয়ে থাকা এই জাহাজটি গাজার আঞ্চলিক জলসীমা থেকে প্রায় ৪৩ নটিক্যাল মাইল (প্রায় ৮০ কিলোমিটার) দূরে থাকাকালীন আটক করা হয়।
এর আগে ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সতর্ক করে বলেছিল, এই যুদ্ধক্ষেত্রে প্রবেশ ও অবরোধ লঙ্ঘনের প্রচেষ্টা প্রতিহত করা হবে।
বুধবার (১ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া এই অভিযানে ইসরায়েলি নৌবাহিনী গাজার দিকে যাওয়া প্রায় ৪৪টি জাহাজ থেকে ৪৭টি দেশের প্রায় ৫০০ কর্মীকে আটক করেছে।
ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ আটক কর্মীদের ইসরায়েলে স্থানান্তর করেছে, যেখান থেকে তাদের নির্বাসিত করা হবে। আটককৃতদের মধ্যে আছেন কর্মী গ্রেটা থানবার্গ, বার্সেলোনার সাবেক মেয়র আদা কোলাউ এবং ইউরোপীয় পার্লামেন্টের সদস্য রিমা হাসানসহ বেশ কয়েকজন উচ্চপদস্থ ব্যক্তিত্ব।
গাজায় অবরোধ ভাঙার আন্তর্জাতিক কমিটি (আইসিবিএসজি) ইসরায়েলের বিরুদ্ধে সহিংসতার অভিযোগ এনেছে। তারা বলেছে, নৌবাহিনী একটি জাহাজে হামলা চালিয়েছে, জলকামান মোতায়েন করেছে ও জোরপূর্বক জাহাজে উঠে কর্মীদের সঙ্গে নির্মম আচরণ করেছে।

আন্তর্জাতিক পরিবহণ শ্রমিক ফেডারেশন (আইটিএফ) এই হামলাকে আন্তর্জাতিক আইন অনুযায়ী অবৈধ বলে নিন্দা করেছে। কলম্বিয়ার রাষ্ট্রপতি গুস্তাভো পেট্রো ইসরায়েলি কূটনীতিকদের বহিষ্কারের ঘোষণা দিয়েছেন ও জাতিসংঘের বিশেষ দূত ফ্রান্সেসকা আলবানিজ এই বাধাগুলেঅকে ‘অবৈধ অপহরণ’ হিসেবে বর্ণনা করেছেন।
মানবিক সাহায্য ও চিকিৎসা সামগ্রী বোঝাই এই নৌবহরটি ছিল কয়েক বছরের মধ্যে প্রায় ৫০টি জাহাজ নিয়ে গাজাগামী সবচেয়ে বড় সহায়তা মিশন। ইসরায়েল প্রায় ১৮ বছর ধরে গাজার ওপর অবরোধ বজায় রেখেছে, যার কারণে ছিটমহলটি দুর্ভিক্ষের কবলে পড়েছে ও ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ইসরায়েলি বোমাবর্ষণে ৬৬ হাজার ২০০ জনেরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।