ট্রাম্পের ১ লাখ ডলারের ভিসা ফি চ্যালেঞ্জ করে মামলা

যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নতুন সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে, যেখানে নতুন এইচ-১বি ভিসার জন্য ১ লাখ ডলার অতিরিক্ত ফি নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল।
স্থানীয় সময় শুক্রবার (৩ অক্টােবর) সানফ্রান্সিসকোর ফেডারেল কোর্টে ইউনিয়ন, নিয়োগকর্তা এবং ধর্মীয় সংগঠনগুলোর একটি জোট এই মামলা দায়ের করে। এটি ট্রাম্পের গত মাসের ঘোষণার বিরুদ্ধে করা প্রথম আইনি চ্যালেঞ্জ। খবর আল জাজিরার।
মামলায় যুক্তরাষ্ট্রের অটো ওয়ার্কার্স ইউনিয়ন, আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অব ইউনিভার্সিটি প্রফেসরসসহ অন্যান্য সংগঠন জানায়, প্রেসিডেন্টের হাতে বিদেশিদের প্রবেশ সীমিত করার ক্ষমতা থাকলেও কংগ্রেস অনুমোদিত আইনকে পাশ কাটানোর অধিকার তার নেই।
এইচ-১বি ভিসা কর্মসূচির মাধ্যমে মার্কিন কোম্পানিগুলো বিশেষায়িত ক্ষেত্রের বিদেশি কর্মী নিয়োগ করতে পারে। বিশেষ করে প্রযুক্তি খাতে এই ভিসার ওপর নির্ভরশীলতা সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে স্পন্সরকারী প্রতিষ্ঠানগুলো সাধারণত ২ হাজার থেকে ৫ হাজার ডলার পর্যন্ত ফি প্রদান করে থাকে।
কিন্তু ট্রাম্পের ঘোষণায় বলা হয়েছে, স্পন্সরকারী প্রতিষ্ঠান অতিরিক্ত ১ লাখ ডলার পরিশোধ না করলে নতুন এইচ-১বি ভিসাধারীরা যুক্তরাষ্ট্রে প্রবেশ করতে পারবে না। যদিও পুরোনো ভিসাধারী বা যারা ২১ সেপ্টেম্বরের আগে আবেদন করেছে, তাদের ক্ষেত্রে এ নিয়ম প্রযোজ্য হবে না।
ট্রাম্প দাবি করেছেন, কম মজুরির বিদেশি কর্মীদের কারণে আমেরিকানরা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পেশা বেছে নিতে নিরুৎসাহিত হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এইচ-১বি কর্মসূচি “আমেরিকান কর্মীদের ব্যাপক প্রতিস্থাপন” ঘটাচ্ছে, যা দেশের অর্থনৈতিক ও জাতীয় নিরাপত্তার জন্য হুমকি।
অন্যদিকে মামলাকারীরা যুক্তি দিয়েছেন, প্রেসিডেন্টের এই একতরফা সিদ্ধান্ত সাংবিধানিকভাবে বেআইনি। তাদের অভিযোগ, এই ঘোষণা আসলে “পে টু প্লে” (টাকা দাও, সুযোগ নাও) নীতিকে চাপিয়ে দিচ্ছে, যেখানে ‘ন্যাশনাল ইন্টারেস্ট’ অজুহাতে স্বজনপ্রীতি ও দুর্নীতির সুযোগ তৈরি হবে।

মামলায় আরও বলা হয়েছে, স্বরাষ্ট্র দপ্তর, সিটিজেনশিপ অ্যান্ড ইমিগ্রেশন সার্ভিসেস ও স্টেট ডিপার্টমেন্ট যথাযথ নিয়মকানুন অনুসরণ না করেই নীতি পরিবর্তন করেছে, যা উদ্ভাবনকে বাধাগ্রস্ত করবে।
প্রতি বছর এইচ-১বি কর্মসূচির আওতায় ৬৫ হাজার বিদেশি কর্মীকে ভিসা দেওয়া হয়, আর উন্নত ডিগ্রিধারীদের জন্য অতিরিক্ত ২০ হাজার ভিসা বরাদ্দ থাকে। সাধারণত ৩ থেকে ৬ বছরের জন্য এই ভিসা প্রদান করা হয়।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, গত বছর ভারতীয়রা সর্বাধিক এইচ-১বি ভিসা পেয়েছে—মোট ৭১ শতাংশ। আর চীন ছিল দ্বিতীয় অবস্থানে, মাত্র ১১.৭ শতাংশ ভিসা নিয়ে।