ঋণ পরিশোধ ও চিকিৎসা চালাতে লাখ টাকায় সন্তান বিক্রি

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে নিজের চিকিৎসার খরচ চালাতে এবং ঋণ পরিশোধের জন্য জোবায়েরা আক্তার মিনা নামের ১৩ মাস বয়সী শিশুসন্তান এক লাখ টাকায় বিক্রি করে দিয়েছেন এক দম্পতি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।
ঘটনাটি ঘটেছে হাজীগঞ্জ পৌরসভার ৩নং ওয়ার্ডের ধেররাবিলওয়াই গ্রামে ইউনুস মজুমদারের বাড়িতে।
সাংবাদিকদের আসার খবর শুনে ঘরে তালা লাগিয়ে পালিয়ে যান সন্তান বিক্রেতা বাবা মো. বশির ও মা আছমা আক্তার।
গতকাল সোমবার দুপুরে চাঁদপুর নোটারি পাবলিকের কার্যালয়ের মাধ্যমে রাজধানীতে নিঃসন্তান এক দম্পতির কাছে নিজের সন্তানকে এক লাখ টাকায় বিক্রি করে দেওয়ার ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে ফেসবুকে লেখালেখি শুরু হলে এলাকায় চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
শিশুটির বাবা মো. বশির মুঠোফোনে বলেন, ২০১৬ সালে সিএনজিচালিত অটোরিকশার চাপায় গুরুতর আহত হন তিনি। এরপর চিকিৎসাজনিত কারণে তিনি ঋণগ্রস্ত হয়ে পড়েন। বর্তমানে তিনি টাকার অভাবে চিকিৎসা এবং ঋণ পরিশোধ করতে পারছে না। এ ছাড়া তিনি অসুস্থতার কারণে আয়-রোজগারও করতে পারছেন না।
শিশুটির বাবা আরও বলেন, আমার সাড়ে তিন বছর ও তের মাস বয়সি দুটি মেয়ে শিশু রয়েছে। টাকার অভাবে আমার চিকিৎসা, ঋণ পরিশোধ ও বাচ্চাদের খাবার কিনতে পারছি না। এদিকে অসুস্থতার কারণে কাজও করতে পারছি না। তাই ছোট মেয়েকে দত্তক দিয়ে দিয়েছি। বিনিময়ে তারা আমার চিকিৎসার জন্য এক লাখ টাকা দিয়েছে।

শিশুটির মা আছমা আক্তার বলেন, মেয়ের জন্য পরান পুড়ে (মায়া লাগে)। কিন্তু কী করব, আমার স্বামীর চিকিৎসা দরকার। তিনি অসুস্থতার জন্য কোনো কাজকর্ম করতে পারেন না। তিনি সুস্থ থাকলে আমাদের খাওয়া-পড়া। তাই বাধ্য হয়ে মেয়েটারে দত্তক দিয়েছি।
হাজীগঞ্জ পৌরসভার কাউন্সিলর মহসিন ফারুক বাদল বলেন, বিষয়টি আমিও শুনেছি। ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি দেখব।
এ বিষয়ে হাজীগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জোবাইর সৈয়দ বলেন, মেয়েটিকে উদ্ধারের জন্য আমি একটি বিশেষ টিম ঢাকায় পাঠিয়েছি। দত্তক নেওয়ার কিছু আইনগত বিধান রয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোমেনা আক্তার বলেন, বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখছি।