পেট্রোল-অকটেনের সংকটে রাজশাহী

ঈদের ছুটির পর থেকে রাজশাহীতে হঠাৎ করে পেট্রোল-অকটেনের সংকট শুরু হয়েছে। নগরীর বাইরে উপজেলা পর্যায়ের কিছু পাম্পে মিলছেই না এ জ্বালানি। ফলে বিপাকে পড়েছেন চালকরা। এদিকে, কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে খুচরা পর্যায়ে বাড়তি দরে জ্বালানি তেল বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। পাম্প মালিকদের দাবি, চাহিদার তুলনায় জ্বালানি সরবরাহ কম। অন্যদিকে, এই ঘটনা সিন্ডিকেটের কোনো চক্রান্ত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
রাজশাহী নগরীর বেশকিছু পেট্রোল পাম্প ঘুরে দেখা গেছে, চাহিদার তুলনায় মোটরসাইকেল কিংবা প্রাইভেটকার চালকদের কম করে তেল দেxয়া হচ্ছে। নগরীর কোথাও কোথাও পেট্রোল আছে, তো অকটেন নেই। আবার কোনো কোনো ফুয়েল স্টেশনে অকটেন পাওয়া গেলেও মিলছে না পেট্রোল।
রাজশাহী জেলা পেট্রোল পাম্প অ্যান্ড ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মমিনুল হক এনটিভি অনলাইনকে জানান, জেলার নয়টি উপজেলায় ৪৮টি তালিকাভুক্ত পেট্রোল পাম্প রয়েছে। প্রায় তিন মাস থেকে এগুলোতে পর্যাপ্ত পেট্রোল-অকটেন আসছে না। ঈদুল ফিতরের ছুটিতে জ্বালানি তেলের এ সংকট আরও বেড়েছে। এ জন্য পাম্পগুলো প্রায় তেল শূন্য হয়ে পড়েছে।
সংকটের কারণে ঈদের আগে চাহিদার তুলনায় কম পরিমাণে পেট্রোল, অকটেন ও ডিজেল বিক্রি করা হয়েছে। ঈদের পরও এ ধারা অব্যাহত রয়েছে। ফলে মোটরসাইকেল ও অন্যান্য যানবাহন চালকরা পড়ছেন চরম ভোগান্তি ও বিড়ম্বনায়।
ঠিক কবে নাগাদ রাজশাহী মহানগর ও জেলায় জ্বালানি তেল সরবরাহ স্বাভাবিক হবে, তা জানাতে পারেনি পাম্প মালিকদের সংগঠন। আর প্রশাসন জানিয়েছে, এটি সিন্ডিকেটের কোনো চক্রান্ত কি না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
জ্বালানি তেল সরবরাহে ঘাটতের কারণে খুচরা বাজারে কোথাও কোথাও বেশি দামে জ্বালানি তেল বিক্রি হতে দেখা গেছে। দেখা গেছে, লিটার প্রতি ২০ থেকে ৩০ টাকা বেশি গুণতে হচ্ছে ক্রেতাদের। আবার কোনো কোনো এলাকার পেট্রোল পাম্পে সরকার নির্ধারিত দরে সীমিত পরিসরে লিটার প্রতি পেট্রোল বিক্রি হচ্ছে ৮৬ টাকা ৭৭ পয়সা ও অকটেন বিক্রি হচ্ছে ৮৯ টাকায়।
রাজশাহী পেট্রোল পাম্প ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মমিনুল হক বলেন, ‘ঈদের আগে কোনোভাবে ক্রেতাদের চাহিদা কমবেশি করে পূরণ করা গেলেও ঈদের পর আর তা সম্ভব হচ্ছে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘যেখানে পাম্পে নয় থেকে সাড়ে নয় হাজার লিটার তেলের চাহিদা থাকে, সেখানে দুই থেকে তিন হাজার পেট্রোল সরবরাহ পাওয়া যাচ্ছে। তাই সংকট তৈরি হয়েছে।’
মজুদের বিষয়ে জানতে চাইলে মমিনুল হক বলেন, ‘মজুত করে কৃত্রিম সংকট তৈরির কোনো উপায় নেই। কারণ জ্বালানি তেল মারাত্মক দাহ্য পদার্থ। এটি পেট্রোল পাম্প ছাড়া যেখানে সেখানে বেশি পরিমাণে মজুত করা যায় না। যাঁরা মজুতের কথা বলছেন, তাঁরা ভুল বলছেন।’