‘প্রতিশ্রুতির টাকা না পেয়ে’ বাস আটকে রাখার দাবি জবি ছাত্রলীগ কর্মীর

পারিবারিক কাজের বিনিময়ে নাকি দেওয়ার কথা ছিল আড়াই লাখ টাকা। কিন্তু, রাখা হয়নি সেই প্রতিশ্রুতি। এরপর শুরু হয় দুজনের মধ্যে বিতণ্ডা। আটকে রাখা হয় ‘প্রতিশ্রুতি ভঙ্গকারী’র বাস। জানা গেছে, বাস আটকে রাখা মেহেদী জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা ছাত্রলীগের কর্মী।
এদিকে নয় দিন আটকে রাখার পর গতকাল সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিমের মধ্যস্থতায় নোমানের বাসটিকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে থানায়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোস্তফা কামাল এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমরা কিছুদিন যাবৎ বাসটি গেটের সামনে দেখতে পাই। পরে বিষয়টি নিয়ে কোতোয়ালি থানার ওসি ও ক্যাম্পাস ফাঁড়ির ইনচার্জ নাহিদুল ইসলামের সঙ্গে কথা বলি, তাঁরা যেন বাসটিকে সেখান থেকে দ্রুত সরিয়ে নেওয়া হয়।’
জানা যায়, এফ.আর হিমাচল পরিবহনের একটি এসি বাস আটকে রাখেন জবি শাখা ছাত্রলীগ কর্মী মেহেদী। এর আগে গত ৬ মার্চ সন্ধ্যার দিকে এ বাসটি পুরান ঢাকার তাঁতীবাজার এলাকা থেকে এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে আটকে রাখা হয়।
এ বিষয়ে মেহেদী বলেন, ‘বাস মালিক নোমানের বউ চলে গিয়েছিল। পরে সে আমাকে বলেছিল, তাঁর বউকে এনে দিতে পারলে আমাকে বাইক, কক্সবাজারের এয়ার টিকিট, স্বর্ণের চেইন ও চার দিন থাকা-খাওয়ার খরচসহ আরও টাকা দেবে। পরে আমি নোমানের বউকে কৌশলে তাঁর কাছে এনে দিছিলাম। কিন্তু, নোমান তাঁর প্রতিশ্রুতি রাখেননি।’
মেহেদী আরও বলেন, ‘আমার কাজের পাওনা আমাকে দিতে হবে। নোমান টাকা না দিয়ে পালিয়ে যাওয়াতে তাঁকে খুঁজে পাইনি। এ জন্য তাঁর গাড়ি আটকে রেখেছি। নোমান টাকা দিয়ে গাড়ি নিয়ে যাক।’
এফ.আর পরিবহনের এমডি নোমান বলেন, ‘তাঁতীবাজার মোড় থেকে কোনো কারণ ছাড়াই জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের কয়েকজন কর্মী আমার গাড়ি বিশ্ববিদ্যালয় গেটে নিয়ে যায়। পরবর্তীতে মেহেদী নামের একজন আমার কাছে আড়াই লাখ টাকা দাবি করে। টাকা না দেওয়া পর্যন্ত গাড়ি ছাড়া হবে না বলে জানায়।’ বউ বিষয়ক কোনো ঘটনা ঘটেনি উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'আমাকে বিব্রত করতে এ ধরণের কথা ছড়ানো হচ্ছে।'
নোমান আরও বলেন, ‘আমি তাঁকে (মেহেদী) বলি, আপনি আমার কাছে টাকা পান, এমন কোনো প্রমাণ যদি দেখাতে পারেন, তাহলে আমি আপনাকে ডাবল টাকা দেব। তখন তিনি আমাকে বলেন—আমি জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সেক্রেটারি আকতার হোসেনের সবচেয়ে কাছের লোক। আমাকে কেউ কিছু করার ক্ষমতা নেই। টাকা না দিয়ে যদি বাড়াবাড়ি বা থানায় অভিযোগ করি, তাহলে আমাকে দেখে নেবে বলে হুমকি দেয়।’
এ বিষয়ে শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম আকতার হোসাইন বলেন, ‘এ ব্যাপারে আমাদের ফাঁড়ির ইনচার্জ আমাকে জানালে আমি বলে দিয়েছি—এর সঙ্গে আমি এবং আমার সভাপতির কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই।’