আদালতে কাঁদলেন মন্ত্রী মোশাররফ

চট্টগ্রামের ফটিকছড়িতে দুই ছাত্রলীগকর্মী ও মুক্তিযোদ্বা হারুন বশর হত্যা মামলায় সাক্ষ্য দিয়েছেন মামলার প্রধান সাক্ষী গৃহায়ন ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ফেরদৌস আরার আদালতে সাক্ষ্য দেন মন্ত্রী। এ সময় ঘটনার বর্ণনা দিতে গিয়ে কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে কেঁদে ওঠেন।
সাক্ষ্য দেওয়ার সময় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন বলেন, ১৯৯২ সালের ৮ মে ফটিকছড়ি উপজেলা ছাত্রলীগের সম্মেলনে সশস্ত্র হামলা চালায় জামায়াত-শিবিরের তৎকালীন ক্যাডার নাছির ও তার বাহিনী। এ সময় ছাত্রলীগ নেতা জমির উদ্দিন ও বাবর নিহত হয়। সম্মেলন শেষে ফেরার পথে উপজেলার আজাদী বাজার এলাকায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফের গাড়িতে হামলা করে শিবির। এ সময় মুক্তিযোদ্বা হারুন বশরকে হত্যা করা হয়। কোনোমতে পালিয়ে গিয়ে প্রাণে রক্ষা পান তৎকালীন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন।
এ ঘটনায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেনের চালক মো. ইদ্রিস বাদী হয়ে ৩১ জনকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। ২০০২ সালের ২৫ জুন অভিযোগ গঠনের পর এ মামলায় সাতজনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে।
সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) রুবেল পাল বলেন, মন্ত্রী ঘটনার কাঠগড়ায় উঠে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে বলেন, ঘটনার দিন মোশাররফ হোসেনের বাসায় মুক্তিযোদ্ধা হারুন বশর যান। তিনি অসুস্থ ছিলেন। এ কারণে আওয়ামী লীগ নেতা তাঁকে সঙ্গে নিতে চাননি। তাঁর সামনেই মেরে ফেলা হয় মুক্তিযোদ্ধা হারুন বশরকে। তাঁকেও পিস্তল ধরে সন্ত্রাসীরা এবং বলে ‘তোর দিন শেষ’। এ সময় তৎকালীন জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ইউনূস গনি চৌধুরীসহ তিনি বাঁশঝাড়ে লুকিয়ে আত্মরক্ষা করেন। এ সময় তিনি আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন এবং তাঁর কান্না চলে আসে।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন মামলার দুই নম্বর সাক্ষী। মন্ত্রীর সাক্ষ্যগ্রহণের সময় মামলার প্রধান আসামি নাছির উদ্দিনকে আদালত হাজির করা হয়।
জেলা সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) আ ক ম সিরাজুল ইসলাম বলেন, মন্ত্রী মোশাররফের সামনে শিবির ক্যাডাররা মুক্তিযোদ্ধা হারুন বশরকে মেরে ফেলে। তিনি এ ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী। তিনি ভাগ্যক্রমে বেঁচে গেছেন।
সরকারপক্ষের আরেক আইনজীবী অ্যাডভোকেট আজহারুল ইসলাম বলেন, পুলিশ সাক্ষী হাজির করতে না পারায় ২৫ বছর ধরে ঝুলে আছে এ মামলাটি। মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। তাঁকে আসামিপক্ষের আইনজীবীরা জেরা করেছেন।