বস্তিবাসীর জন্য ১০ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট হবে

রাজধানীর বস্তিবাসীর পুনর্বাসনের জন্য, প্রায় ১০ হাজারঅ্যাপার্টমেন্ট করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে জানালেন গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। আজ রোববার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ব্র্যাক আয়োজিত দরিদ্রদের গৃহায়ণে অর্থায়ন বিষয়ক জাতীয় সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকায় যে পরিমাণ মানুষ বস্তিতে থাকে, তাদের পুনর্বাসনের জন্য ১০ হাজার অ্যাপার্টমেন্ট করতে হবে। যেখানে তারা স্বল্প পরিমাণ ভাড়া দিয়ে বসাবাস করবে এবং সরকার এ বিষয়ে যথাযথ পরিকল্পনা নিচ্ছে। এ ছাড়া টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের জন্য সবার জন্য আবাসনে বর্তমান সরকার গুরুত্ব দিচ্ছে বলেও জানান মন্ত্রী।
গণপূর্তমন্ত্রী বলেন, মিরপুরের বাউনিয়ায় ১০ একর জমির ওপর বস্তিবাসীর জন্য ১০ হাজার ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে। এরমধ্যে ৫৫০টি ফ্ল্যাটের নির্মাণকাজ শিগগিরই শুরু করা হবে। খুব অল্প ও সহজে পরিশোধযোগ্য ভাড়াভিত্তিতে এসব ফ্ল্যাটে বস্তিবাসীরা থাকবেন। তিনি বলেন, দারুস সালামে হাউজিং অ্যান্ড বিল্ডিং রিসার্চ ইনস্টিটিউটে বস্তিবাসীদের জন্য আরো এক হাজার ৫৩টি ফ্ল্যাট নির্মাণ করা হবে এবং বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় তিনটি জেলার ১৯টি বস্তিতে পাঁচ হাজার ৭০০ পরিবারের জন্য উন্নত আবাসন সুবিধা গড়ে তোলা হচ্ছে।
মন্ত্রী আরো বলেন, জনসংখ্যা বৃদ্ধির কারণে গ্রামে যত্রতত্র বাড়িঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। এর ফলে প্রতিদিন ২৩৫ হেক্টর কৃষি জমি নষ্ট হচ্ছে। এটা কোনোভাবেই দেশের জন্য মঙ্গলজনক নয়। তাই গ্রামেও এখন বহুতল ভবন নির্মাণের মাধ্যমে কৃষিজমি রক্ষা করতে হবে। কৃষিজমি সুরক্ষার জন্য নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা আইন প্রণয়ন করা হচ্ছে। এরই মধ্যে মন্ত্রিসভায় এ আইনের বিষয়ে নীতিগত অনুমোদন পাওয়া গেছে। এ আইন পাস হলে গ্রামে বাড়ি করতেও যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিতে হবে।
ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের নগর উন্নয়ন অধিদপ্তর দেশের ১৪টি উপজেলার বিশদ পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। পায়রা সমুদ্রবন্দর ও কুয়াকাটাসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের আরে সাতটি উপজেলার বিশদ পরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু করা হয়েছে।
মন্ত্রী বলেন, কৃষিজমি সুরক্ষায় পর্যায়ক্রমে গোটা দেশের বিশদ পরিকল্পনা প্রণয়ন করা হবে। বস্তিবাসীর উন্নয়নে ঢাকা মহানগরসহ দেশের যেকোনো জেলায় বহুতল ভবন নির্মাণে ব্র্যাক ও যেকোনো বেসরকারি সংস্থা এগিয়ে এলে সরকারের পক্ষ থেকে সহযোগিতা দেওয়া হবে।
ব্র্যাকের সিনিয়র কর্মকর্তা আসিফ সালেহর সভাপতিত্ব অনুষ্ঠানে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ সাঈদ খোকন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান খন্দকার আখতারুজ্জামান, নগর উন্নয়ন অধিদপ্তরে পরিচালক ড. খুরশীদ জাবিন হোসেন তৌফিক বক্তব্য দেন।
সাঈদ খোকন দরিদ্রদের জন্য স্বল্প সুদে আবাসনের ব্যবস্থা করতে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতি আহ্বান জানান।
অনুষ্ঠানে বস্তিবাসীর জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ, ব্র্যাক ও জাতিসংঘ উন্নয়ন কর্মসূচির (ইউএনডিপি) তিনটি আবাসন মডেল উপস্থাপন করা হয়। উপস্থাপিত আবাসন মডেলের মডারেটরের দায়িত্ব পালন করে মেয়র্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যাডভোকেট আজমত উল্লাহ খান।
অংশগ্রহণকারীরা এসব মডেলের ওপর আলোচনা-পর্যালোচনা করে সরকারের কাছে সুপারিশমালা উপস্থাপন করবেন। কনভেনশনে রাজশাহী ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র, চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান পরিকল্পনাবিদ, বিভিন্ন পৌরসভার মেয়র ও সরকারি কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন।