সুন্দরবন থেকে মৃত রয়েল বেঙ্গল টাইগার উদ্ধার

পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কটকা সংলগ্ন ছাপড়াখালী অভয়ারণ্য এলাকা থেকে একটি মৃত রয়েল বেঙ্গল টাইগার উদ্ধার করেছে বনবিভাগ। বাঘিনীটি প্রায় সাত ফুট সাত ইঞ্চি লম্বা।
মৃত বাঘিনীটি মঙ্গলবার বন থেকে উদ্ধারের পর বুধবার শরণখোলা রেঞ্জ অফিসে আনা হয়। সেখানে মৃত বাঘিনীর দেহের ময়নাতদন্ত শেষে প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা সার্জন ডা. আলাউদ্দিন মাসুদ বলেন, ময়নাতদন্তের পর নিশ্চিত হওয়া গেছে বার্ধক্যের কারণেই পূর্ণ বয়স্ক এই বাঘিনীর স্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে ।
পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মাহমুদুল হাসান জানান, মঙ্গলবার দুপুরে বনের ছাপড়াখালী এলাকায় বনপ্রহরীরা নিয়মিত টহলের সময় মৃত বন্যপ্রাণীর দুর্গন্ধ পান। পরে তারা দুর্গন্ধ ধরে তল্লাশি চালিয়ে বনের ভেতরে একটি মৃত বাঘিনী পড়ে থাকতে দেখেন। বাঘিনীর মৃতদেহ উদ্ধার করে বুধবার শরণখোলা রেঞ্জ কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। পরে সেখানে শরণখোলা ও মোরেলগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সমন্বয়ে বাঘটির ময়নাতদন্তের কাজ শুরু হয়। ময়নাতদন্ত শেষে নিশ্চিত হওয়া গেছে বার্ধ্যকের কারণে এই বাঘিনীটির মৃত্যু হয়েছে।
মাহমুদুল হাসান আরো বলেন, মৃত এ বাঘিনীর চামড়া, দাঁত, নখসহ অন্যান্য অঙ্গপ্রতঙ্গ সংরক্ষণ করা হবে। এ ছাড়া বাকি দেহবাশেষ শরণখোলা রেঞ্জ কার্যালয়ের অভ্যন্তরে মাটি চাপা দেওয়া হবে।
বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও প্রকৃতি ব্যবস্থাপনা বিভাগের (খুলনা) বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. মোদিনুল আহসান বলেন, বয়সের (বার্ধক্যজনিত) কারণেই বাঘটি মারা গেছে।
মৃত বাঘ উদ্ধারের বিষয়ে সেভ দ্য সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান লায়ন ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম বলেন, সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরা পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে। বনবিভাগের চোখ ফাঁকি দিয়ে অসাধু জেলেরা বনে প্রবেশ করে বিষ দেওয়ায় বনের নদী-খালের পানি বিষযুক্ত হয়ে থাকে। সেই বিষ মিশ্রিত পানি জলজ ও বন্যপ্রাণী পান করে নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে, এমনকি মারাও যাচ্ছে। সুতরাং এ বাঘটিও এর প্রভাবে আক্রান্ত এবং পরে মারা গিয়ে থাকতে পারে।
২০০১ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত ৫০টি বাঘের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে স্বাভাবিকভাবে মারা গেছে মাত্র ১০টি বাঘ। লোকালয়ে ঢুকে পড়া ১৪টি বাঘকে পিটিয়ে মেরেছে স্থানীয় জনতা, একটি নিহত হয়েছে ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে আর বাকি ২৫ বাঘ হত্যা করেছে চোরা শিকারিরা।