এখনো ভোটার হননি সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা
![](http://103.16.74.218/sites/default/files/styles/big_3/public/images/2016/01/30/photo-1454160342.jpg)
কুড়িগ্রামের দাসিয়ারছড়াসহ বাংলাদেশের অভ্যন্তরের বিলুপ্ত ১১১ ছিটমহলের বাসিন্দারা এখনো ভোটার হননি। এখনো জানেন না তাঁরা কোনো ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত।
এদিকে আগামী মার্চেই দেশে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন আয়োজন শুরু করতে চায় নির্বাচন কমিশন। এ অবস্থায় নির্বাচনে অংশ নেওয়া নিয়ে শঙ্কায় পড়েছেন সাবেক ছিটমহলের বাসিন্দারা।
৬৮ বছরের বন্দিজীবনের অবসান ঘটলেও প্রত্যক্ষভাবে ভোট দেওয়ার সুযোগ হয়নি এসব এলাকার বাসিন্দাদের। এবার ভোটার তালিকায় অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে নিজেদের পছন্দমতো প্রার্থী নির্বাচন করে অবহেলিত এলাকায় উন্নয়নের সুযোগ আছে। সে সুযোগ কাজে লাগানোর জন্য এসব এলাকার মানুষ ভোটার হওয়ার জন্য বেশ আগ্রহী। অথচ এরই মধ্যে ছয় মাস হয়ে গেলেও প্রশাসনের তৎপরতা না থাকায় ছিটমহলগুলোতে এ প্রক্রিয়া এখনো শুরু হয়নি। ফলে এসব এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে তৈরি হয়েছে হতাশা আর ক্ষোভ।
দাসিয়ারছড়ার বাসিন্দা মকবুল হোসেন বলেন, ‘আমরা ফুলবাড়ী উপজেলার অন্য নাগরিকের মতো যে ইউনিয়নের বাসিন্দা হব সেখানকার ভোটার হয়ে ভোট দিতে চাই। কিন্তু এখনো আমাদের তথ্য সংগ্রহ করে ভোটার তালিকায় নাম প্রকাশ করা হয়নি।’
দাসিয়ার ছড়া বিলুপ্ত ছিটের সাবেক সভাপতি আলতাব হোসেন জানান, ‘আমরা দাসিয়ারছড়াবাসীরা এখানে নতুন একটি ইউনিয়নের দাবি করেছিলাম। কিন্তু শুনতেছি সরকার তা না করে অন্য তিনটি ইউনিয়নের সঙ্গে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় ও বেশি জনসংখ্যার বিলুপ্ত ছিটমহল দাসিয়ারছড়াকে পার্শ্ববর্তী তিনটি ইউনিয়নের সঙ্গে যুক্ত করবে। আমরা সাবেক ছিটবাসীরা যেকোনো একটি ইউনিয়নে অন্তর্ভুক্ত হতে চাই। কিন্তু এখন পর্যন্ত কোনো সিদ্ধান্তের কোনো কাগজ আমরা পাইনি। আমরা চাই দ্রুত আমাদের দাসিয়ারছড়াসহ ১১১টি ছিটমহলের বিষয়টি চূড়ান্ত করে আগামী ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটদানের ও অংশগ্রহণ করার সুযোগ দেওয়া হোক।’
গত বছর আগস্ট মাসে বাংলাদেশের মানচিত্রে নতুনভাবে যোগ হয়েছে ১১১ ছিটমহল। এসব এলাকার জনসংখ্যা ৪১ হাজার। বাসিন্দারা জানিয়েছেন, তাঁরা কোনো ইউনিয়নের আওতায় থাকবেন কিংবা তাঁদের কোন ওয়ার্ডে ভোটার হিসেবে ঠাঁই হবে তা জানেন না তাঁরা। তবে নির্বাচনে ভোটার ছাড়াও প্রার্থী হয়ে অংশ নেওয়ার আগ্রহও আছে এসব এলাকার বাসিন্দাদের।
এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা দেলোয়ার হোসেন জানান, নির্বাচন কমিশন থেকে এখন পর্যন্ত কোনো নির্দেশনা না পাওয়ায় সিদ্ধান্ত দেওয়া যাচ্ছে না।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন বলেন, ‘বিলুপ্ত ছিটের বাসিন্দারা কে কোন ইউনিয়নে সংযুক্ত হচ্ছেন তা তালিকা করে এরই মধ্যেই নির্বাচন কমিশনে পাঠানো হয়েছে। কমিশন যখন চূড়ান্ত করে গেজেট প্রেরণ করবে তখনই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ তবে নির্বাচন কমিশনে কথা বলবেন বলেও জানান তিনি।